মিনহাজ উদ্দিন, গোয়াইনঘাট

১০ আগস্ট, ২০২০ ০০:৪০

বন্যায় বিধ্বস্ত গোয়াইনঘাটের সড়ক ব্যবস্থা

টানা ৪ দফা বন্যা আর ঢলে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার প্রায় সবকটি সড়ক। বন্যার পানি কমলেও সড়কগুলো এখনও চলাচলের অনুপযোগি হয়ে আছে।

ঢল আর বন্যার পানিতে সড়কগুলোতে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্তের। কোথাও কোথাও বিশাল ভাঙন ও ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া সড়কের ব্রিজ-কালভার্টগুলোরে মাটি সরে গিয়ে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধও হয়ে আছে কয়েকটি সড়কের।

গোয়াইনঘাট উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে ১৬২ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। বন্যায় এসব সড়কের বেশিরভাগের অবস্থাই নাজুক।

সরজমিনে উপজেলার গোয়াইনঘাট-রাধানগর- জাফলং সড়ক, সিলেট-সালটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক, সিলেট-সারী-গোয়াইন সড়কসহ প্রধান প্রধান সড়কগুলো ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি সড়কেই ভয়াবহ ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। বন্যার পানি নামার পর দৃশ্যমান হয়ে ওঠেছে এসব ভাঙন।

এছাড়াও গোয়াইনঘাট-সোনারহাট সড়ক, গোয়াইনঘাট-হাতিরপাড়া-ফতেহপুর সড়ক, গোয়াইনঘাট-সাতাইন-কোওর বাজারউপজেলা সড়কসহ গ্রামীণ সড়কগুলোর অবস্থাও বেহাল।  এসব সড়কের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং সড়ক। এ সড়কের বেশকটি সেতু এপ্রোচ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় গোয়াইনঘাটের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

সড়কটিতে এলজিইডির দুই দফা বালু এবং ইটের রাবিশ ফেললেও বন্যার পানির তোড়ে সব ভেসে গেছে। এ অবস্থায় এই সড়ক দিয়ে যাত্রী-পথচারীদের চলাচলে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সিলেট-সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের দামারি, পেকেরখাল, টুকুইরসহ বিভিন্ন স্থানে গর্ত আর ভাঙণের সৃষ্টি হয়েছে। সারী-গোয়াইন সড়কের বিভিন্নস্থানেও গর্ত ও ভাঙন দেখা দিয়েছে। আলীরগাও ইউনিয়নের কাকুনাখাই এলাকায় গড়ে ওঠা হিদাইরখাল বাধের এ সমড়কে অধিক ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সারী অববাহিকায় হিদাইরখাল নদীর উৎসমুখে একটি গোষ্ঠী অবৈধভাবে এই বাঁধ তৈরি করে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দেয়। ফলে ঢলের পানি সড়কটিতে সরাসরি ধাক্কা খাওয়ায় সড়কে অধিক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়া এই সড়কের বিভিন্নস্থানে কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দিয়ে ঘর বাড়ি নির্মাণ করার কারণেও পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে পড়েছে।

বিজ্ঞাপন



এব্যাপারে জাফলংয়ের ব্যবসায়ী সুরুজ মিয়া বলেন, বন্যায় উপজেলার সবকটি সড়কে মারাত্মক ভাঙন দেখা দিয়েছে। গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং সড়কের অবস্থা একেবারে নাজুক। সেতুগুলোর এপ্রোচ সরে গিয়ে গর্তের কারণে ১৫ দিন ধরে সরাসরি উপজেলার সাথে জাফলংয়ের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে যানবাহনে ভাড়া বেড়ে গেছে দ্বিগুণ।

গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের প্রতিষ্টাতা সভাপতি এম এ মালিক বলেন, টানা ৪ দফা বন্যায় গোয়াইনঘাটের সর্বত্রই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষি, মৎস্যের পাশপাশি গোয়াইনঘাটের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার প্রায় সবকটি সড়কই ভেঙ গেছে।

এ ব্যাপারে এলজিইডির গোয়াইনঘাট কার্যালয়ের প্রকৌশলী রাসেন্দ্র চন্দ্র দেব বলেন, দফায় দফায় বন্যার কারণে গোয়াইনঘাটের সসকল সড়কেরই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবকটি সড়কের চিত্র ও তথ্যাবলী আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।

এ ব্যাপারে কথা হলে গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুস সাকিব বলেন, পাহাড়ি ঢল ও বন্যায় গোয়াইনঘাটের সড়ক, কৃষি, মৎস্যসহ সবক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সার্বিক চিত্র উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং এখানকার সাংসদ- প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদকে অবহিত করেছি। আশা করা যায় গোয়াইনঘাটের সড়কসমুহের স্থায়ী সমাধানে একটা ইতিবাচক উদ্যোগ অচিরেই গ্রহণ করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত