মাধবপুর প্রতিনিধি

০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৭:৪৬

‘ইউএনওর নিরাপত্তায়’ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সড়কে বেড়া!

রোগী ও জনচলাচলে চরম দুর্ভোগ

নিরাপত্তার অজুহাতে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে টিন দিয়ে বেড়া দিয়ে মূল প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এতে করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগত রোগী, শিক্ষার্থী ও এলাকার অর্ধশত পরিবারের লোকজন চরম দূর্ভোগে পড়েছেন। এখন অনেকটা পথ ঘুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের আসতে হচ্ছে।

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার দুদিন পরে মাধবপুরের ইউএনও ও উপজেলা কমপ্লেক্সের নিরাপত্তার স্বার্থে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পথ টিন দিয়ে বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার জন্য উপজেলা কমপ্লেক্সের মধ্য দিয়ে একটি পাকা রাস্তা দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। হঠাৎ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে বিকল্প পথে চলাচল করতে বলা হয়। মূল রাস্তা বন্ধ থাকায় রোগীর গাড়ি বিকল্প সড়ক দিয়ে অনেকটা পথ ঘুরে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। অন্যদিকে বিকল্প সড়কটি পুরোপুরি সংস্কার না হওয়া ও সরু হওয়ায় প্রায় সময় যানজট সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। হাসপাতাল এলাকার অনেক বাসিন্দা উপজেলা পরিষদের সামনে দিয়ে সড়কটি ব্যবহার করতেন। কিন্তু ওই সড়কে বেড়া দেওয়ায় হাসপাতাল এলাকার অনেক পরিবার বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

হাসপাতাল এলাকার বাসিন্দা দুলাল চৌধুরী জানান, হাসপাতাল এলাকা ও উপজেলা কমপ্লেক্সের পিছনে একটি আবাসিক এলাকা গড়ে উঠেছে। এই এলাকায় ৪০/৪৫ টি পরিবার বসবাস করে। সবাই এ সড়কটি ব্যবহার করে। হঠাত করে সড়কটি বন্ধ করে দেওয়ায় সবাই দূর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনা হলে ফায়ার সার্ভিস পর্যন্ত আসতে পারবে না। এলাকাবাসী অনেকটা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মারুফা বেগম জানান, তিনি তার মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা করতে এসেছেন। কিন্ত হঠাৎ করে দেখতে পান সড়কে বেড়া দেওয়া। তাই অটোরিকশা ঘুরিয়ে বিকল্প সড়ক দিয়ে হাসপাতালে আসতে হয়েছে। এতে পরিবহন খরচ ও সময় দুটিই বেশি লেগেছে।

বিজ্ঞাপন



এই সড়ক দিয়েই মাধবপুর প্রেমদাময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যেতে হয়। এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুছা মিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিদ্যালয়ে পাঠ দান বন্ধ থাকলেও অনেক শিক্ষাথী ভর্তি হতে ও সার্টিফিকেট নিতে বিদ্যালয়ে আসেন। কিন্তু হঠাত করে সড়কে বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ায় শিক্ষার্থী অভিভাবক ও আমরা সমস্যায় পড়েছি। এই রাস্তাটি উন্মক্ত করে দেওয়া না হলে অনেক পরিবার, শিক্ষার্থী ও চিকিৎসক ও রোগীরা চড়ম সমস্যার মুখে পড়বে।

মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইশতিয়াক আল মামুন বলেন, দীর্ঘদিন যাবত এ রাস্তাটি হাসপাতালের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। হঠাৎ করে রাস্তায় বেড়া দেওয়ায় রোগী ও রোগীদের স্বজনরা চরম সমস্যার মুখে পড়েছেন। বড় গাড়ি নিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করা যাচেছ না। কেউ কেউ অটোরিকশা দিয়ে বিকল্প সড়ক পথে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন।

জানা যায়, হাসপাতালের বরাদ্দকৃত ওষুধ নিয়ে একটি কার্গো সোমবার আসলে উপজেলা প্রশাসন বেড়া কিছুটা খুলে দেয়। পরে আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। উপজেলা প্রশাসন বলছে, নিরাপত্তা কারনে এ সড়কটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

মাধবপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা তাসনুভা নাশতারান জানান, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার উপর সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে উপজেলা কমপ্লেক্সের নিরাপত্তা ও বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে এ সড়কটি বন্ধ করে দেওয়া  হয়েছে। রোগীদের হাসপাতালে যেতে সমস্যা নেই। তারা বিকল্প সড়কটি ব্যবহার করতে পারবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত