সিলেটটুডে ডেস্ক

২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৬:০৬

হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগে আগ্রহীদের নিয়ে সিলেট চেম্বারের মতবিনিময়

সিলেটে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগে আগ্রহী উদ্যোক্তা ও ডিজিটাল স্টার্টআপদের নিয়ে দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র উদ্যোগে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় চেম্বার কনফারেন্স হলে এ সভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন সাহা।

মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বর্তমান সরকার দেশের আইসিটি খাতকে এগিয়ে নিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারি কর্মকর্তারা এখন বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের ঘরে এসে সেবা দিতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, আগামী যুগ হবে সম্পূর্ণ তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর। যেখানে বাংলাদেশি লেবাররা বিদেশে সপ্তাহে গড়ে ২০০ ডলার রোজগার করেন, সেখানে একজন আইটি ওয়ার্কার সপ্তাহে ২ হাজার ডলার বা তার চেয়েও বেশী আয় করতে পারেন। তাই আমাদেরকে আইটি খাতে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন প্রজন্মকে তথ্য-প্রযুক্তির পিছনে দৌঁড়াতে হবে। সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সকল সুযোগ-সুবিধা খুঁজে বের করে সেগুলোকে কাজে লাগাতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কোম্পানীগঞ্জে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক বর্তমান সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে দেশ তথ্য-প্রযুক্তি খাতে কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই বিনিয়োগকারী ও আইটি উদ্যোক্তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগে আগ্রহী ও ডিজিটাল স্টার্টআপদের মতবিনিময় সভা আয়োজনের জন্য চেম্বার নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।

সভায় বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কের কাজের অগ্রগতি ও মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেন প্রকল্প পরিচালক (উপ সচিব) মো. গোলাম সারওয়ার ভূঁইয়া। তিনি বলেন, কালের আবর্তনে মানবসভ্যতায় এখন ‘সাইবার এইজ’ চলছে। আমাদেরকেও সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এ যুগে সারাদেশে নির্মাণাধীন হাই-টেক পার্কগুলো হবে আমাদের উন্নয়নের সূতিকাগার। তিনি জানান, যারা ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে স্থান বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করেছেন তাদেরকে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক অথরিটির ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। ওয়েবসাইটে সকল ধরণের তথ্য ও সেবা প্রদান করা হবে।

তিনি জানান, হাই-টেক পার্কে বর্তমানে গ্যাস সংযোগের কাজ চলছে। এছাড়াও এখানে ব্যাংক শাখা স্থাপনের জন্য স্থান বরাদ্দ রাখা হয়েছে। হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগকারীরা মেশিনারিজ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবেন বলে তিনি জানান। তিনি হাই-টেক পার্ক সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য ও সেবার জন্য উদ্যোক্তাগণকে ০১৭৭৯-২২৭০৫০ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানান। এছাড়াও তিনি আগামীতে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক অথরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে উদ্যোক্তাদের একটি মতবিনিময়ের ব্যবস্থা করবেন বলে জানান। সভায় প্রশ্ন-উত্তর পর্বে তিনি আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন সাহা বলেন, তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে ব্যবসায়ীদেরকে সচেতন করতে দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কোম্পানীগঞ্জে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কের সাথে সিলেট চেম্বার শুরু থেকে যুক্ত রয়েছে। ইতোপূর্বেও উদ্যোক্তা ও ডিজিটাল স্টার্টআপদের সাথে এ বিষয়ে একাধিক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিবছর সিলেটের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে অনেক কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার পাশ করে বের হচ্ছে। তারা অনেকে ভালো চাকুরী নিয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছে, আবার অনেকে উপযুক্ত কাজের ক্ষেত্র পাচ্ছেন না। এসব তরুণদেরকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে আমরা আইটি পণ্য, সফটওয়্যার বিদেশে রপ্তানি করতে পারি। এজন্য এ খাতের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদেরকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে সিলেটের বিনিয়োগকারীদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্লট বরাদ্দ দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বারের পরিচালক মো. মামুন কিবরিয়া সুমন ও সিলেট ওমেন চেম্বারের সভাপতি স্বর্ণলতা রায়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের পরিচালক মাসুদ আহমদ চৌধুরী, আব্দুর রহমান, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, মো. আব্দুর রহমান (জামিল), খন্দকার ইসরার আহমদ রকী, শাবিপ্রবির সিএসই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাছুম, প্রভাষক এনামুল হোসেন, বারাকা পাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফাহিম আহমদ চৌধুরী, অগ্রণী ব্যাংকের জিএম মো. শফিকুর রহমান, সোনালী ব্যাংকের জিএম ইনচার্জ বাবুল মো. আলম, অগ্রণী ব্যাংকের ডিজিএম মাহমুদ রেজা ও মো. আশেক এলাহী, জনতা ব্যাংকের ডিজিএম সনদীপ কুমার রায়, অগ্রণী ব্যাংকের জিন্দাবাজার শাখার ব্যবস্থাপক নেহার জ্যোতি পুরকায়স্থ, সিলেটের বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার, উদ্যোক্তা ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত