কুলাউড়া প্রতিনিধি

১৪ অক্টোবর, ২০২০ ১৭:৩৪

নোয়াখালী থেকে কুলাউড়ায় বেড়াতে এসে গণধর্ষণের শিকার কিশোরী

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি থেকে কুলাউড়ায় বেড়াতে এসে সৎ বাবার সহায়তায় গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৭ বছরের এক কিশোরী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ৩ হাজার ১শ টাকার বিনিময়ে তিন ধর্ষকের হাতে তুলে দেন সৎ বাবা ইমরান হোসেন।

বুধবার (১৪ অক্টোবর) পুলিশ গণধর্ষণের শিকার কিশোরীকে উদ্ধার করে এবং অভিযুক্ত তিন যুবককে আটক করেছে।

এ ঘটনায় ওই কিশোরী বাদী হয়ে সৎ বাবা ইমরান হোসেনসহ ৪ জনকে আসামি করে কুলাউড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আটককৃতরা হলেন- উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের কুটাগাঁও গ্রামের সৈয়দ আলীর পুত্র কাশেম আলী (২৩), গাজীপুর গাংপাড় এলাকার আসকর আলীর পুত্র আরজান আলী, গাজীপুরের মাস্টারের দোকান এলাকার ঝন্টু সূত্রধরের পুত্র রাজেশ সূত্রধর পাপ্পু (২১)।

মামলার অভিযোগ ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গণধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর পিতা মারা যাওয়ার পর তার মা ইমরান হোসেনকে বিয়ে করেন। ওই ঘরে ইমরানের ঔরসজাত একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। পরবর্তীতে ১০ বছর আগে মা মারা যাওয়ার পর ইমরান হোসেন দ্বিতীয় বিয়ে করে আগের স্ত্রীর (ওই কিশোরীর মা) সন্তানদের ফেলে রেখে নিজের মেয়েকে নিয়ে কুলাউড়ায় চলে আসেন। সৎ বোনের (ইমরানের মেয়ের) ঘরে জন্ম নেওয়া ছেলে সন্তানকে দেখতে গত ৭ দিন আগে ছোট ভাইকে নিয়ে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি থেকে কুলাউড়ায় আসেন ওই কিশোরী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইমরান ওই কিশোরীকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা পৌর শহরের একটি এলাকার বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে আসেন। পৌরশহরের স্টেশন রোডস্থ এলাকায় নিয়ে এসে ৩ হাজার ১শ টাকার বিনিময়ে ওই কিশোরীকে কাশেম আলীর হাতে তুলে দেন ইমরান। সেখান থেকে কাশেম ও তার সহযোগী আরজান এবং পাপ্পু মিলে জোরপূর্বক ওই কিশোরীকে সিএনজি অটোরিকশাতে তুলে উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের মনছড়া এলাকার বাসিন্দা কাদির মিয়ার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে ঘরের ভিতর বন্দি করে পালাক্রমে ওই কিশোরী ধর্ষণ করে কাশেম, আরজান এবং পাপ্পু।

রাতে কিশোরীর আর্তচিকারে পার্শ্ববর্তী স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি টের পেয়ে ধর্ষকদের আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেন। পরে কুলাউড়া থানার এসআই সনক কান্তি দাশ একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন এবং অভিযুক্ত ধর্ষকদের আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। এদিকে এ ঘটনায় সহায়তাকারী কিশোরীর সৎ পিতা ইমরান হোসেন পলাতক রয়েছেন।

এসআই সনক কান্তি দাশ বলেন, ওই কিশোরী বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন এবং মামলা দায়েরের প্রস্তুতি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কিশোরীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) সাদেক কাওছার দস্তগীর মোবাইলে বলেন, ভিক্টিমকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং তিন অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত