নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ নভেম্বর, ২০২০ ২২:৫৬

বিয়ের জন্য ঘর ছেড়েছিলেন রেশমা, চা বাগানে নিয়ে হত্যা করলো প্রেমিক

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাধবপুর চা বাগানের বাসিন্দা রেশমা আক্তার (২৫)। একই উপজেলার সুনছড়া চা বাগানের কর্মী দীপেশ ওরাং। ৮/৯ মাস পূর্বে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি দুজনের পরিবার। এরপর পালিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন তারা।

দীপেশের সাথে আলাপ করে ৯ নভেম্বর রাতে ঘর ছেড়ে চলে আসেন রেশমা। রাত ৯ টার দিকে বন্ধুর মোটরসাইকেল নিয়ে মাধবপুর চা-বাগান‌ থেকে রেশমাকে নিয়ে আসেন দীপেশ। এরপর নিয়ে যান দেওড়াছড়া চা বাগান। সেখানে নিয়ে বিয়ের বদলে রেশমাকে হত্যা করেন দীপেশ।

রোববার (১৫ নভেম্বর) এই হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধরায় জবানবন্দি দেয়েছেন দীপেশ ওরাং। এরআগে শনিবার দীপেশকে আটক করে পুলিশ। তার আগের দিন শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) দেওছড়া চা বাগান থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় এক তরুণীর মরদে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পরিবারের সদস্যরা মরদেহটি রেশমার বলে শনাক্ত করেন।

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান জানিয়েছেন, রেশমা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেণ দীপেশ। জবানবন্দিতে তিনি হত্যাকান্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।

রোববার রাতে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের ফেসবুক থেকে দেওয়া এক পোস্টে এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

এ পোস্ট থেকে জানা যায়, স্থানিয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে শুক্রবার কমলগঞ্জের দেওড়াছড়া চা বাগানের ২৩ নং সেকশন থেকে অজ্ঞাতনামা নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন শনিবার রেশমা আক্তারের বড় ভাই সিরাজুল ইসলাম হাসপাতালে গিয়ে লাশের পড়নের কাপড়, গলার তাবিজ ও পায়ের নুপুর দেখে লাশটি তার বোনের বলে শনাক্ত করেন। ওইদিনই সুনছড়া চা বাগান থেকে  দীপেশ ওরাংকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে প্রথমে তিনি জানান, রেশমাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় দেওড়াছড়া চা বাগানে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল আটকে রেশমাকে নিয়ে যায় এবং তাকে মারধর করে। এরপর তিনি বাড়ি চলে আসে এবং ভয়ে কাউকে কিছু জানাননি।

এরপর পুলিশ দীপেশ তার যে বন্ধুর মোটরসাইকেল নিয়ে গিয়েছিলেন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। দুজনের বক্তব্যের মধ্যে অমিল থাকায় পুলিশ আবার দীপেশকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হত্যার কথা স্বীকার করেন দীপেশ।

দীপেশের বরাত দিয়ে পুলিশ জানানয়, রেশমা আক্তারের সাথে প্রেমের এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। তাই রেশমা আক্তার তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। বিয়ে না করলে নারী নির্যাতন মামলা করারও হুমকি দিচ্ছিলেন রেশমা। এরপর রেশমা আক্তারকে খুনের ছক আঁকতে থাকেন দীপেশ।

এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রেশমাকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার কথা বলে ৯ নভেম্বর রাতে দেওড়াছড়া চা বাগানে নিয়ে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন দীপেশ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত