কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

১৭ নভেম্বর, ২০২০ ২০:৪৮

কমলগঞ্জে নেই সার্বক্ষণিক সাব-রেজিস্টার, ভোগান্তি চরমে

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্টার না থাকায় প্রায় ১ মাস ধরে বন্ধ জমি রেজিস্ট্রি কার্যক্রম। এতে শত শত ভূমি ক্রেতা ও বিক্রেতাদের লাগামহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। জমি ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভোগান্তির পাশাপাশি সরকারও হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। এছাড়া এ অফিসের সঙ্গে জড়িত প্রায় অর্ধ-শতাধিক দলিল লেখক বেকার সময় পার করছেন।

জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্টার আব্দুল কাদির চলিত বছরের অক্টোবর মাসে এখান থেকে বদলি হওয়ার পর আর কোনো সাব-রেজিস্টার এখানে পদায়ন করা হয়নি। রেজিস্ট্রি না হওয়ায় এ উপজেলার শত শত জমি ক্রেতা-বিক্রেতা ও জরুরি কাজে দলিল উত্তোলনকারীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন।

এদিকে গত ৫ নভেম্বর জুড়ি উপজেলার সাব-রেজিস্টার মঞ্জুরুল আমিনকে কমলগঞ্জের সাব-রেজিস্টার হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। কমলগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্টারের পদ শূন্য থাকায় জুড়ি উপজেলার সাব-রেজিস্টার মঞ্জুরুল আমিন সপ্তাহে দুই দিন অফিস করেন। গত ৫ নভেম্বর প্রথম কর্মদিবসে প্রায় দেড় শতাধিক ভ‚মি রেজিস্টেশন করেন তিনি। বৃহস্পতিবারের পর থেকে আবারো বন্ধ থাকে ভ‚মি রেজিস্ট্রেশনের কার্যক্রম। প্রায় ১০দিন পর গত রোববার তিনি অফিস করেন। এদিন সকাল ১০টা থেকে ভুক্তভোগী মানুষ অপেক্ষা করেন সাব-রেজিস্টারের জন্য। কিন্তু মঞ্জুরুল আমিনের মৌলভীবাজারে একটি জরুরি মিটিং থাকায় তিনি বিকাল সাড়ে ৩টায় এসে অফিস শুরু করেন। সকাল থেকে রাত অবধি মানুষ অপেক্ষা করছেন দলিল রেজিস্ট্রির আশায়।

আলাপকালে ভুক্তভোগী জালালিয়া গ্রামের মো. আহমদ আলী, কেচুলিটি গ্রামের আব্দুর রব, কাজিরগাঁও গ্রামের মালিক মিয়া, গোপীনগর গ্রামের মহরজান বিবি, ধর্মপুর গ্রামের মদন কর, গোপীনগর গ্রামের ময়ূর বেগম, শ্রীপুর গ্রামের সরলা বেগম, জানান, তারা সকাল থেকে জমি রেজিস্ট্রির জন্য অপেক্ষা করে সন্ধ্যায় কাজ সম্পন্ন করেন। ক্রেতা-বিক্রেতারা অবিলম্বে কমলগঞ্জে একজন সাব-রেজিস্টার পদায়নের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ দলিল লিখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজ্বী মো. ইজ্জাদুর রহমান জানান, এ সমিতির ৪৭ জন দলিল লেখক কয়েকশত দলিল রেজিস্ট্রির অপেক্ষায় ছিল। আমাদের এখানে সার্বক্ষণিক সাব-রেজিস্টার না থাকায় ভুক্তভোগী ক্রেতা বিক্রেতারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এখানে একজন সাব রেজিস্টার নিয়োগ দেওয়া আবশ্যক হয়ে পড়েছে।

মৌলভীবাজার জেলা দলিল লিখক সমিতির সভাপতি আব্দুল মছব্বির জানান, কমলগঞ্জে ভ‚মি ক্রেতা বিক্রেতাদের ভোগান্তির মাত্রা দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। কমলগঞ্জে সার্বক্ষণিক সাব রেজিস্টার না দিলে এ ভোগান্তি কমবে না। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান যাতে বর্তমানে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সাব রেজিস্টার মঞ্জুরুল আমিনকে কমলগঞ্জের সাব রেজিস্টার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া জন্য।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সাব-রেজিস্টার মঞ্জুরুল আমিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, কমলগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্টার না থাকায় আমাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সপ্তাহে দুই দিন রোববার ও সোমবার কমলগঞ্জে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দায়িত্ব পালন করব।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত