নিজস্ব প্রতিবেদক, নবীগঞ্জ থেকে ফিরে

১২ জানুয়ারি, ২০২১ ১৮:২০

পৌরসভার ভোটে নেই জামায়াত!

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মাঠে নেই জামায়াত। বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ এই দলটি এখন পর্যন্ত কোনো প্রচারণায় অংশ নেয়নি। পৌর নির্বাচনে জামায়াতের নিজেদের কোনো প্রার্থীও নেই। ফলে পুরোপুরো নীরব রয়েছে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো দলটি।

সংগঠনের স্থানীয় নেতারা জানিয়েছেন, বিএনপির সাথে তাদের জোট জাতীয় নির্বাচনে। স্থানীয় নির্বাচনে প্রচারণা ও সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রের নির্দেশনা নেই।  

নবীগঞ্জে নির্বাচনে মেয়র পদে ৩ জনসহ রয়েছেন ৫৩ জন প্রার্থী। মেয়র পদে একজন স্বতন্ত্র ছাড়া অন্য দুজন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির। বিভিন্ন সময় স্বতন্ত্রের মোড়কে নিবন্ধন বাতিল হওয়া দলটির প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিলেও এখানে কোনো প্রার্থী নেই। মাঠেও নেই দলটির প্রকাশ্য কোনো তৎপরতা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নবীগঞ্জে জামায়াতে ইসলামী সাংগঠনিক অবস্থা তুলনামূলক ভালো অবস্থায় রয়েছে। ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন জামাতের প্রার্থী মাওলানা আশরাফ আলী। সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের কারণে সব শেষে উপজেলা পরিষদে এখানে কোনো প্রার্থী দেয়নি জামায়াত। পৌরসভা নির্বাচনেও তারা প্রার্থী দেয়নি। ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে নিজেদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে রাখছেন, এমনটি জানিয়েছেন স্থানীয় এক নেতা।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) পৌরসভার ১, ৪, ৬, ৭ ও ৮ নম্বর ঘুরে প্রকাশ্যে দলটির নেতা-কর্মীদের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। ভোটার ও প্রার্থীদের সমর্থকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় নির্বাচন হওয়ায় এলাকাপ্রীতি ও নানা কারণে জামায়াত কাউকে সমর্থন দেয়নি। এছাড়া এখানে দলের বড় একটি অংশ বিএনপির প্রার্থীর সাথে নেই। যার কারণে জামায়াত কৌশলী ভূমিকায় পালন করছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক নেতা বলেছেন, ‘নানা কারণে জামায়াত নির্বাচনী কাজে প্রকাশ্যে সঙ্গে নেই। তবে তাদের সব ভোট ধানের শীষে পড়বে। তাই আমরাও তাদের প্রকাশ্যে আনছি না। দলের একটি অংশ না থাকলেও নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না।’

তবে জামায়াতের একাধিক নেতা জানান, স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপিকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রের কোনো নির্দেশনা নেই। এছাড়া বিএনপি সমর্থনও চায়নি। এটা স্থানীয় নির্বাচন আওয়ামী লীগ, বিএনপির প্রার্থী দুজই ঘুরে ফিরে পরিচিত। তাই এক জনের পক্ষে কাজ করছে আরকে জন অসন্তুষ্ঠ হবেন। এ জন্য কর্মী সমর্থকরা যার যার মতো আছেন। যে প্রার্থীর সাথে যার সম্পর্ক ভালো তারা তাকেই ভোট দেবেন। কোনো নির্দেশনা নেই। আবার এ নিয়ে গণমাধ্যমে মুখ খুলতেও রাজি নন তারা।

এ ব্যাপারে কথা বলেতে নবীগঞ্জ পৌর জামায়াতের আমির সাইদুল হক চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কল না ধরায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘জামায়াতের সাথে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। তারাও প্রচারণায় অংশ নেয়নি। তবে ভোট দিতে পারে। আমি তাদেরসহ সকলের কাছে ভোট চাচ্ছি। তারা আমাকেই ভোট দেবে বিশ^াস আছে।’

প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১৬ জানুয়ারি এই পৌরসভায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এখানে আওয়ামী লীগের গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল, বিএনপির ছাবির আহমদ চৌধুরী ও স্বতন্ত্র মাহবুবুল আলম সুমন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। ৯টি ওয়ার্ডের ১০টি কেন্দ্রের ৪৮টি বুথে ভোট নেওয়া হবে। মোট ভোটার ১৮ হাজার ৭৭৭।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত