শাকিলা ববি

০৬ মার্চ, ২০২১ ০০:২৩

মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ নগরবাসী, করোনা নিয়ে ব্যস্ত সিসিক

সাধারণত বর্ষাকাল শুরু হলেই মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এবছর বর্ষাকাল শুরুর আগেই সিলেট নগরে বেড়েছে মশার উপদ্রব। প্রায় মাসখানেক ধরে নগরজুড়ে মশা রাজত্ব বিস্তার করছে। রাতে তো বটেই দিনেও মশার যন্ত্রণায় ঘরে টেকা দায়।

নগরবাসী যখন মশার কাছে কাহিল তখন সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ব্যস্ত করোনার টিকা নিয়ে। করোনার টিকা প্রয়োগ নিয়ে ব্যস্ততার কারণে এবার মশক নিধন অভিযান দেরিতে শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিসিকের কর্মকর্তারা।

নগরের ড্রেন-ছড়াগুলো ভরে আছে আবর্জনায়। সড়কের আশপাশেও পড়ে থাকছে আর্বজনার স্তুপ। এতে সহজেই বিস্তার লাভ করছে মশা।

সিসিকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেরিতে হলেও গত ১ মার্চ থেকে মশক নিধন কর্মসূচি শুরু করেছেন তারা

সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, নগরীর  ৭, ১২, ১৩, ১৭, ২১নং ওয়ার্ডে চলছে মশক নিধন কার্যক্রম। আগামী রোববার থেকে বন্দর জিন্দাবাজার, আম্বরখানায় এই মশক নিধন কার্যক্রম চলবে। পর্যায়ক্রমে নগরের সব ওয়ার্ডে মশক নিধন কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

সিলেট সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, নগরে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলছে। এটা ধারাবাহিকভাবে চলবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার পরেই লার্ভিসাইড স্প্রে করা হচ্ছে মেশিন দিয়ে। মশার ডিম ধ্বংস করার জন্য এই লার্ভিসাইড স্প্রে ব্যবহার করা হয়। এবং বড় মশা মারার জন্য এডাল্টিসাইট স্প্রে করা হয় ফগার মেশিন দিয়ে। রোববার থেকে লার্ভিসাইড স্প্রের পাশাপাশি ফগার মেশিনও ব্যবহার করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মশা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে জানান তারা।

বিজ্ঞাপন


 
নগরের কালীবাড়ি এলাকার গৃহিণী শিমু আক্তার বলেন, ‘অনেকদিন যাবত মশার উৎপাত বেড়েছে। আগে বৃষ্টি হলে মশার উপদ্রব বাড়তো। আর এখন বর্ষাকাল শুরুর আগেই মশার উপদ্রব বাড়তে শুরু করেছে। সকাল সন্ধ্যা বলে কোনো কথা নেই। সব সময়ই মশার উপদ্রব থাকে।’

বাগবাড়ি এলাকার খুরশেদ আলম বলেন, ‘মশার যন্ত্রণায় ঘরে বসা যায় না। এমনকি বাইরে কোথাও এক কাপ চা খেতে বসলেও মশা কামড়ায়। বাচ্চারা মশারির নিচে পড়তে বসতে। মশার জন্য এখন দিনের বেলায়ও মশারি টাঙাতে হয়।’

মদিনা মার্কেট এলাকার বাসিন্দা হুমায়ূন আহমেদ বলেন, ‘গতবছর এমন সময় আমাদের এলাকায় মশার তেমন উপদ্রব তেমন ছিল না কিন্তু এবছর বর্ষাকাল আসার আগেই মশার উপদ্রব বেড়ে গেছে। গত একমাস যাবত মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ সবাই। সিসিকের উচিত ছিল ফিল্ড পর্যবেক্ষণ করে আরও আগেই মশক নিধন কার্যক্রম শুরু করা।’

এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে বলেন, ‘গত ১ মার্চ থেকে আমাদের মশক নিধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গত এক দেড় মাস যাবত এই কার্যক্রম একটু ধীরগতিতে চলে। কারণ আমার কোভিড ভ্যাক্সিনেশন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। তাই এই মশক নিধন কার্যক্রমে নজর দেওয়া হয়নি। এখন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আশাকরি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।’

তবে মশার উপদ্রব বাড়লেও এই মশার কামড়ে তেমন কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাধারণত এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়। কিন্তু এখন যে মশাগুলো নগরীতে আছে সেগুলো এডিস নয় কিউলেক্স মশা। যেগুলো ড্রেন, ছড়া, নালায় জন্ম নেয়। এই মশার কামড়ে ভাইরাসজনিত কোনো রোগ হয় না। মসকিটো এনার্জি বা বিভিন্ন ধরনের এনার্জি যাদের আছে তাদের মশার কামড়ের কারণে সমস্যা হতে পারে।’
 
তিনি বলেন, ‘এডিস মশার প্রজনন কাল হচ্ছে বর্ষাকাল। তাই এই মশাকে এডিস মশা ভেবে আতঙ্কিত হবেন না। এডিস মশার লার্ভা সংগ্রহ করা হয় বৃষ্টির সময়। কারণ এডিস মশার জন্ম হয় বৃষ্টির জমে থাকা পানি থেকে। তাই মার্চের পর থেকে আমরা এডিস মশার লার্ভা সংগ্রহ শুরু করবো। এখন  লার্ভিসাইট স্প্রের মশার ডিম ধ্বংস করা হচ্ছে। ফগার মেশিন স্প্রে করলে এডাল্ট মশাগুলোও নিয়ন্ত্রণে আসেবে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত