কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

০৬ মার্চ, ২০২১ ২০:২২

কমলগঞ্জে অটোচালক হত্যা : সাবেক চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করে মামলা

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ছুরিকাঘাতে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক জলিল মিয়াকে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।

শুক্রবার (৫ মার্চ) রাতে দায়ের করা হত্যা মামলায় সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক গোলাম কিবরিয়া শফিকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের নাম উল্লেখ ও ৫/৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। মামলায় বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক গোলাম কিবরিয়া শফির দুই ভাইকেও আসামি করা হয়েছে। নিহতের বড় ভাই খলিল মিয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

গত বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) রাতে শমশেরনগর সিএনজি ফিলিং স্টেশনে এই ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে। নিহত অটোরিকশা চালক জলিল মিয়া আলীনগর বস্তি এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস মিয়া ওরফে লাল মিয়ার ছেলে।

এদিকে প্রকাশ্যে নির্মমভাবে ছুিরকাঘাত করে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালককে হত্যার ঘটনায় শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি এসময় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলেন।

এরপর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া নিহতের বাড়িতে গিয়ে শোক সন্তপ্ত পরিবার সদস্যদের সমবেদনা জ্ঞাপন করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতকরণে পুলিশি সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার জাকারিয়া বলেন, ‘কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। আসামি যতবড় প্রভাবশালী হউক না কেনো পুলিশ থাকে গ্রেপ্তার করবে। সাধারণ মানুষের উদ্যেশ্যে স্বজনদের আশ্বাস প্রদান করে বলেন, দ্রুত সময়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।’ 

এ সময় তিনি কমলগঞ্জ থানার ওসিকে ২ দিনের ভেতরে আসামিকে থানা হাজতে দেখতে চান বলেও নির্দেশ দেন। পরে পুলিশ সুপার তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নগদ ৫ হাজার টাকা নিহত পরিবার সদস্যদের হাতে তুলে দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কমলগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফজলে এলাহী বলেন, ‘এ ঘটনায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৬ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।’

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে সিএননজি ফিলিং স্টেশনে আগে গ্যাস ফিলিং করতে কারের লাইনে চলে যায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক জলিল মিয়া। এ নিয়ে গ্যাস ভরতে আসা কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, বিএনপি নেতা গোলাম কিবরিয়া শফি ও তার চালক হামিদ মিয়ার সাথে সিএনজি অটোরিকশা চালক জলিলের তর্কবিতর্ক শুরু হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মাঝে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সময় কার মালিক ফোন করে ছোট ভাইসহ একদল যুবককে ডেকে আনেন। আগত যুবকরা এসইে সিএনজি অটো চালক জলিলকে উপর্যুপরিভাবে ছুরিকাঘাত করে। এসময় ভাইকে বাঁচাতে আসা কাশেম মিয়াকেও মারধর করা হয়। ঘটনার পর এলাকাবাসী গুরুতর আহতাবস্থায় অটো চালক জলিল মিয়াকে উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দ্রুত সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার বিকেলে মরদেহ আলীনগর গ্রামে রাত সাড়ে ৮টায় নামাজের জানাজা সম্পন্ন করে জলিল মিয়ার লাশ দাফন করা হয়।

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান বলেন, ‘শুক্রবার রাতে নিহত সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক জলিল মিয়ার বড় ভাই খলিল মিয়া বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে সম্ভাব্য সকল স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে।’

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত