জুড়ী প্রতিনিধি

০৩ আগস্ট, ২০২১ ২১:২১

জুড়ীতে ঘরে ঘরে জ্বরের প্রকোপ, করোনা টেস্টে আগ্রহ কম

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে জ্বর, সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা বেশির ভাগ রোগী জ্বরে আক্রান্ত বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। করোনা টেস্টের আগ্রহ কম থাকলে ও টিকা নিতে ভিড় করতে দেখা যায় অনেককে। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ জনের মত মানুষ টিকা নিচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

করোনা মহামারির তৃতীয় ঢেউয়ে সারা দেশে যখন সর্বাত্মক লকডাউন তখন এসব উপসর্গ দেখা দেওয়া ও দিন দিন রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রত্যেক বাড়িতে ৩-৫ জন মানুষ জ্বর, সর্দিতে আক্রান্ত।

জ্বরে আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীই করোনা পরীক্ষা ও হাসপাতালে যেতে অনীহা প্রকাশ করছে। যারা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছে, তারাও আবার করোনা পরীক্ষা করতে খুব একটা আগ্রহী নয়।হাসপাতালে গেলে করোনা টেস্ট করাতে হবে এই ভয়ে অনেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা করাচ্ছে আবার অনেকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকদের কাছ থেকে ওষুধ নিচ্ছে।

জানা যায়, উপজেলার প্রতিটি গ্রামে এমন কমই বাড়ি আছে যে বাড়িতে জ্বরে আক্রান্ত রোগী নেই। অধিকাংশ রোগীই গ্রামের নানা ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে তা সেবন করছে। করোনা শনাক্ত হলে সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে করোনা পরীক্ষা কিংবা হাসপাতালে যাচ্ছে না।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১২০ থেকে ১৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকে। তাদের অধিকাংশ জ্বর, সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তাদের মধ্যে কারো কারো শ্বাসকষ্ট রয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে বিভিন্ন রোগ নিয়ে মাত্র পাঁচজন রোগী ভর্তি আছে, বাকিরা বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে। এছাড়া গত ২৫ জুলাই থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত ৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. জান্নাত আরা খানম জানান, জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। কিন্তু সে হারে পরীক্ষা হচ্ছে না। তবে আমরা নানাভাবে রোগীদেরকে করোনা পরীক্ষা করতে উৎসাহিত করছি। মাস্ক ছাড়া ও অনেক রোগী চিকিৎসা নিতে চলে আসে, এই অসচেতনতা অনেক সমস্যা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সমরজিৎ সিংহ বলেন, প্রতিদিনই জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চিকিৎসকরা রোগীদের করোনা পরীক্ষা করার কথা বললেও তাদের অধিকাংশই নানা অজুহাতে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছে। তবে টিকা নেওয়ার জন্য প্রতিদিন গড়ে ৫০০-৫১০ জনের মত নিবন্ধন করে হাসপাতালে ৪৯০-৫০০ জন পর্যন্ত মানুষ টিকা নেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত