হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:

১৩ অক্টোবর, ২০২১ ০০:৪৩

অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে দেবর-ভাবিকে শেকলে বেঁধে নির্যাতন

অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে দেবর ও ভাবিকে শেকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার গাজিপুর ইউনিয়নের কোণাগাঁও গ্রামে।

মঙ্গলবার বিকেলে দুইজনকে শেকলে বেঁধে রাস্তা দিয়ে হাটানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়।

তবে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর অভিযোগ তার স্বামী গোপনে আরেকটি বিয়ে করেছেন। তাকে বাড়ি থেকে বিদায় করতে এই নাটক সাজিয়েছেন।

গৃহবধূর শ্বশুর ছমদ মিয়া ও পরিবারের লোকজন অভিযোগ করেন, ৭ বছর আগে উপজেলার মানিকভান্ডার গ্রামের জনৈক ব্যক্তির মেয়েকে বিয়ে করেন তার ছেলে ভিংরাজ মিয়া। তাদের ৬ মাসের এক ছেল সন্তানও রয়েছে।

গত দুই বছর ধরে গৃহবধু তার চাচাতো দেবর শাকিল মিয়ার (১৮) সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পরেছেন। এক বছর আগে সে শাকিলকে না পাওয়ার কষ্টে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে সুস্থ করে। পরে শাকিলের সাথে কথা বলতে থাকে নিষেধ করে দেওয়া হয়।

পরিবারের নিষেধ অমান্য করে গোপনে তিনি শাকিলের সাথে সম্পর্ক চালিয়ে যান।

সোমবার (১২ অক্টোবর) স্বামী ভিংরাজ চিকিৎসার কাজে ঢাকা যান। এ সুযোগে রাত সাড়ে ১০টার দিকে দেবর শাকিলের সাথে অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পরেন ওই গৃহবধূ।

এ সময় শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাদেরকে আটক করে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখেন।

রাতভর শারীরিক নির্যাতনের পর মঙ্গলবার সকালে দুইজনকে শেকলের দুইদিকে বেঁধে পুরো গ্রাম প্রদক্ষিণ করানো হয়। পরে তিন কিলোমিটার দূরের ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবির, স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য আজাদ মিয়া ও স্থানীয় মুরব্বিরা দুইজনকে পরিবারের জিম্মায় দেন।

এরপর ওই গৃহবধুকে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

সব অভিযোগ অস্বীকার করে ওই গৃহবধূ জানান, তার স্বামী সম্প্রতি গোপনে আরেকটি বিয়ে করেছেন। ওই মেয়েকে ঘরে তোলতে এবং তাকে ঘর থেকে বিদায় করতে দীর্ঘদিন ধরে শ্বশুর বাড়ির লোকজন চক্রান্ত করছেন।

সোমবার রাতে দেবর শাকিল মিয়া ঘরে আসেন। দুইজন বসে গল্প করছিলেন। এ সময় শ্বশুরসহ পরিবারের লোকজন তাদেরকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে শেকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতন চালান।

এক বছর আগে বিষ খাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, তারা আমাকে বার বার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আসছিল। এতে কষ্ট পেয়ে আমি বিষ খেয়েছিলাম।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ূন বলেন, আমি সম্পূর্ণ বিষয়টি জানি না। গ্রামের লোকজন দুইজনকে বেঁধে নিয়ে আসছিল। আমি দুইজনকে পরিবারের জিম্মা দিয়ে দেই।

জানতে চাইলে চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী আশরাফ বলেন, আমি বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জেনেছি। তবে এখনও কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ না পেলে ফেসবুকে দেখেই ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব না। তবে অভিয়োগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত