ইয়াকুব শাহরিয়ার, শান্তিগঞ্জ:

১৪ নভেম্বর, ২০২২ ২৩:৩৫

শান্তিগঞ্জে আ. লীগের প্রথম সম্মেলন: সম্মেলনেই সভাপতি-সম্পাদকের নাম ঘোষণার দাবি

প্রথমবারের মতো শান্তিগঞ্জে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। ২০০৮ সালে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা থেকে আলাদা হওয়ার পর আওয়ামী নেতৃবৃন্দরা আলোচনার মাধ্যমে দুই বার শান্তিগঞ্জ উপজেলা কমিটি গঠন করলেও মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) প্রথম বারের মতো সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন হতে যাচ্ছে। সম্মেলনকে সফল করতে ব্যপকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা। এতে চাঙ্গাভাব ফিরে এসেছে উপজেলার আওয়ামীপন্থি সকল নেতা-কর্মীদের মাঝে।

আওয়ামী লীগের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি সক্রিয় কমিটির প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের। সকলের প্রত্যাশা, সম্মেলনে উপস্থিত সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের রায় নিয়ে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সম্মেলন স্থলেই যেনো কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের নির্বাচিত ব্যক্তিদের নাম ঘোষণা করা হয়।

এদিকে জেলার নেতারা বলছেন, তারা আলোচনা করে যদি এমন পরিবেশ তৈরি করতে পারেন তাহলে সম্মেলনস্থলেই কমিটির এ দুই পদে নির্বাচিত ব্যক্তিদের নাম ঘোষণা করবেন। প্রয়োজনে কাউন্সিলে যেতে হলে তারা কাউন্সিলেও যেতে পারেন। এজন্য উপজেলার প্রতি ইউনিয়নের কাউন্সিলরদের তালিকা তৈরি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার নেতারা।

একাধিক সূত্র জানায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের চলমান কমিটির সভাপতি হাজি আবদুল হেকিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের পরিচালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান। সম্মেলন মঞ্চে বক্তব্য রাখবেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি,  আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক, কেন্দ্রিয় কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সদস্য আজিজুস সামাদ ডন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান ও সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন।

শান্তিগঞ্জ বাজারে পুরোনো পুলিশ ফাঁড়ির সামনে প্রস্তুত করা হয়েছে সম্মেলনের বিশাল প্যান্ডেল। সম্মেলনের সফলতা, সিনিয়র নেতাদের শুভচ্ছা ও পছন্দের ব্যক্তিকে পছন্দের পদে দেখতে চেয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে তৈরি করা হয়েছে একাধিক তোরণ, উপজেলাব্যাপী টানানো হয়েছে ব্যানার। মূল মঞ্চকে তৈরি করা হয়েছে আকর্ষনীয় করে।  

নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হওয়ার জন্য সকল ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ। মোতায়েন করা হবে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য। সম্মেলন চলাকালীন সময়ে পুরোটা সময় সতর্ক অবস্থানে থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ব্যপারে শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী বলেন, সম্মেলনে মানুষের জমায়েত হবে বেশি। ভিআইপিরা আসবেন। তাই আমাদের প্রস্তুতিও কঠোরভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে (সোমবার, বিকাল ৩টায়) আমরা সম্মেলনস্থল রেকি করেছি। আমাদের বিশেষ দল কাজ করছে। মঙ্গলবার অনুষ্ঠানস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের একান্ত রাজনৈতিক সচিব মো. হাসনাত হোসেন বলেন, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একটাই দাবি যাদের দ্বারা শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সক্রিয় থাকে তাদেরকে যেনো কমিটিতে রাখা হয়। শুধু কমিটিতে রাখলেই হবে না, গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখতে হবে। আর সাধারণ মানুষের রায় নিয়ে সম্মেলনস্থলেই যেনো কমিটি ঘোষণা করা হয়।

উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এডভোকেট বোরহান উদ্দিন দোলন বলেন, ত্যাগী, আওয়ামী লীগ পরিবারের প্রকৃত কর্মীরা যেনো কমিটিতে স্থান পায়। কোনো উড়ে এসে জোড়ে বসারা যেনো কমিটিতে স্থান না পায়। এটাই প্রত্যাশা আমাদের।

সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন বলেন, আমরা সাংগঠনিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। প্রথমে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সাথে আলোচনা করবো, কথা বলবো। সমোঝোতারা মাধ্যমে একটা ভালো কমিটি গঠনের চেষ্টা করবো। তাতে না হলে দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিলে যাবো। আমরা বলে রেখেছি, কাউন্সিলরদের তালিকা প্রস্তুত রাখতে। প্রয়োজনে কাউন্সিল করে কমিটি দেওয়া হবে। আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টাই থাকবে, মঞ্চে থেকেই যেনো কমিটিটা ঘোষণা দিয়ে আসতে পারি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত