নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ জুন, ২০২৩ ২০:২৮

সিলেটে জামায়াতের বড় সাফল্য, কাউন্সিলর পদে ৬ জনের জয়

বর্তমান সরকারে অধীনে বিএনপি যখন সব নির্বাচন বর্জন করছে, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে অংশ নেওয়াদের বহিষ্কার করছে ঠিক তখন ব্যতিক্রম জামায়াত ইসলাম। বিভিন্ন নির্বাচনে তাদের (জামায়াতের) প্রার্থীরা অংশ নিয়েছেন, জয়ও পাচ্ছেন। এমন বাস্তবতায় সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন জামায়াতের ৬ জন কাউন্সিলর।

দীর্ঘদিন ঘরোয়া পরিবেশে সভা-সমাবেশ করতে গিয়ে সারাদেশেই পুলিশের বাধার মুখে পড়ত জামায়াতে ইসলামী। রাজধানীতে ১০ জুনের সমাবেশের পর থেকে তারা অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে তারা সিলেটে প্রচারণা চালিয়েছে। সিলেট নগরীর ৪২টি সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ১৪টি ওয়ার্ডে জামায়াতের অন্তত ২৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বাধাহীন প্রচারণার সুযোগে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক দলীয় প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার আশা করেছিল নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন বাতিল হওয়া দলটি। এর সাফল্যও পেয়েছে তারা।

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে ৪ জন পুরুষ এবং দুইজন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর জয় পেয়েছেন।

এরমধ্যে ৭নং ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন সায়ীদ মো. আবদুল্লাহ। লাটিম প্রতীকে নির্বাচন করে ৩৩১৯ ভোট পেয়েছেন তিনি। ১৬নং ওয়ার্ডে তৃতীয়বারের মতো বিজয়ী হয়েছেন বর্তমান আব্দুল মুহিত জাবেদ। ট্রাক্টর প্রতীকে নির্বাচন করে ২১০৮ ভোট পেয়েছেন তিনি। ২৭নং ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন আব্দুল জলিল নজরুল। টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকে নির্বাচন করে ১৮৫৪ ভোট পেয়েছেন তিনি।৩৭নং ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন রিয়াজ মিয়া। টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকে নির্বাচন করে ৮৪১ ভোট পেয়েছেন তিনি। ৭, ৮ ও ৯ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ড রেবেকা বেগম এবং ২৫, ২৬ ও ২৭ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ড ছমিরুন নেছা।

এ ছাড়া সাতটি ওয়ার্ডে জামায়াতের প্রার্থীরা দ্বিতীয় হয়েছেন।

তবে মহানগর জামায়াতের আমির মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (২২ জুন) রাতে সিলেটটুডেকে বলেন, ‘‘আমরা দলগতভাবে কোনো নির্বাচনে নেই। এই সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নাই দেখে আমরা নির্বাচন বর্জন করি। কিন্তু কাউন্সিলর নির্বাচনের বিষয়টা ভিন্ন। স্থানীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনেক সময় আত্মীয়তা, এলাকার কারণে লোকজনের কথা ফেলতে পারেন না।

‘‘আমাদের কিছু লোকজন আমাদের সাথে থাকে নির্বাচন করেছে। এটা তাদের স্ব-উদ্যোগ। দলীয়ভাবে তাদের কোনো সহযোগিতা করা হয়নি। আমরা তাদের পক্ষে বক্তব্যও দেইনি। তবে যারা জয়ী হয়েছেন তাদের মধ্যে ২ জন নারী ও ৪ জন পুরুষ আমাদের সাথে থাকেন।’’

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের সিসিক নির্বাচনে দলের মহানগর শাখার তৎকালীন আমীর এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে মেয়র পদে প্রার্থী করেছিল জামায়াত। জোটসঙ্গী জামায়াতকে ছাড়াই সেবার মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। সিলেট সিটি নির্বাচনকে ঘিরেই বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এরপর নানা ইস্যুতে দূরত্ব বাড়তে বাড়তে সিলেটে অঘোষিতভাবে ভেঙেই গেছে বিএনপি-জামায়েতের নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট।

সর্বশেষ নির্বাচনে মেয়র পদে আরিফুল হক যেখানে প্রায় এক লাখ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন, সেখানে মাত্র ১১ হাজার ভোট পাওয়ায় জামায়েতের প্রার্থী এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত