নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৯:০৭

স্বপ্নতরী কারো সঙ্গে প্রতারণা করেনি, সংবাদ সম্মেলনে দাবি

সিলেটের স্বপ্নতরী কোনে সদস্যের সঙ্গে প্রতারণা করেনি। প্রায় ৪ হাজার সদস্যদের নিয়ে সমাজের কল্যানে কাজ করছে। টাকা আত্মসাতকারী পরিচালক শাহীন তার কিছু লোক নিয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।

শনিবার সিলেট নগরীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান ফয়েজ উল কয়েস। তিনি পরিচালক ও সদস্যদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে শাহীন চক্রের কবল ও অপপ্রচার থেকে সংগঠনটি রক্ষা করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

লিখিত বক্তব্যে ফয়েজ উল কয়েস উল্লেখ করেন, ২০০৯ সালে ‘আমরা দাঁড়াবো আমাদের পায়ে’ এই স্লোগানে যাত্রা শুরু করে স্বপ্নতরী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটড। ১১ জন পরিচালকরা সমিতি ও গরীবদের উন্নয়নে কাজ করছেন। বর্তমানে সমিতির সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার। সংগঠনের পরিচালক সৈয়দ মো. শাহীন গ্রাহকদের লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করেন। পরে তাকে বরখাস্ত করা হয়। টাকা পরিশোধ না করতে ৮ মাস পূর্বে ২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে উপশহরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর হামলার নাটক সাজান তিনি। দুর্ঘটনাকে হামলার নাটক সাজিয়ে ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এর পর থেকে একের পর এক মামলা দিয়ে পরিচালক ও সদস্যদের হয়ারনী শুরু করেন।

শাহীনের কারণে সমিতির প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে দাবি করে ফয়েজ উল কয়েস জানান, ২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে শাহীনের পায়ে অস্ত্রপচারকালে অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর করেন সমিতির সহকারি পরিচালক রুবেল আহমদ। কিন্তু এই রুবেলকে ৮মাস পর দায়ের করা মিথ্যা মামলায় ৯ নং আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া শাহীনের চিকিৎসা তিনি নিজে করেন দাবি করে বলেন, তার কারণে আমার মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। কয়েক ঘন্টা পর ওইদিন সন্ধ্যায় তার মা চিরবিদায় নেন।

বক্তব্যে বলা হয়, শাহীন সমিতির পরিচালকদের আপত্তি থাকা সত্ত্বে বিভিন্ন জনকে সমিতির সদস্য করে এবং তাদের মাঝে ঋণ বিতরন করে টাকা ভাগ-ভাটোয়ারা করে নেন। শাহীন নিজে ও তার স্ত্রী, ভাইদের এবং সমন্ধীদের নামে এবং অন্যান্য সদস্যদের নামে প্রতারনা করেন।
আত্মসাতকৃত টাকা প্রতি মাসে ৫ লাখ টাকা করে ফিরিয়ে দিতে সিটি কর্পোরেশনের ২১ নং ওয়ার্ডের আব্দুর রকিব তুহিন, ২২ ওয়ার্ডের সৈয়দ মিছবাহ উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিলর এডভোকেট সালেহ আহমদ সেলিম, ২৪ নং ওয়ার্ডের সোহেল আহমদ রিপন এবং ২২, ২৩ ও ২৪ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর সালেহা কবির শেপীর সম্মুখে শাহিন ও তার ২ ভাইয় অঙ্গিকারনামা করেন। অঙ্গিকারনামায় সে সড়ক দূর্ঘটনায় আহতের কথাও স্বীকার করে। মেডিকেল সার্টিফিকেট, এমনকি তার উপর পূর্বের দায়েরকৃত অন্যান্য ২-৩টি মামলায় আদালতে সময় প্রার্থনার (সাবোকাস) আবেদনেও সড়ক দূর্ঘটনার কথা সে নিজে উল্লেখ্য করে।

নিজেকে ১৯৯৪ সালে শিশু একাডেমী কর্তৃক সিলেট জেলার শ্রেষ্ঠ সংগঠন হিসেবে পুরস্কার প্রাপ্ত দাবি করে সমিতর চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, প্রায় ৩টি মাস বিনা অপরাধে সাঁজানো মামলায় তিনি কারাভোগ করেছেন। মূল ১১ পরিচালকরে মধ্যে শাহিনই ছিল সবচেয়ে বাজে। পরবর্তীতে তার সেই মুখোস উন্মোচন হয়। সমিতিকে জিম্মি করে প্রায়ই আমাদের ছোটখাটো ভুল ত্রুটি নিয়ে ব্ল্যাক মেইলিং করতেন।

সংবাদ সম্মেলনে পরিচালকদের ওপর থেকে মামলা প্রত্যাহার করে প্রতারক, টাকা আত্মসাতকারী শাহিন চক্রকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি করেন ফয়জ উল কয়েস। সংবাদ সম্মেলনে সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ আব্দুল আজিজ, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ইকবাল, সহ সম্পাদক আফজাল হোসেন চৌধুরী, অর্থ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম রাজু, পরিচালক আলিম উদ্দিন, আকিক আহমদ, মোস্তফা কামাল, আবুল খায়ের, সহকারি পরিচালক, দুলাল রায়, মখলিছুর রহমান, রুয়েল আহমদ, মিলাদ আহমদ, আনোয়ারুল হক, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত