রেজুওয়ান কোরেশী, জগন্নাথপুর

০৫ মে, ২০২৪ ২২:৩০

জগন্নাথপুর-চিলাউড়া সড়কের ৫ কিলোমিটার ভাঙাচোরা, জনদুর্ভোগ

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর-চিলাউড়া- স্বজনশ্রী সড়কের প্রায় ৫ কিলোমিটার অংশ ভেঙেচুরে গেছে। সড়কজুড়ে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ভারী মালবাহী ট্রাক চলাচলের কারণে কিছু কিছু স্থানের গর্ত মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। যানবাহন চলাচল করতে ভোগান্তিতে পড়ছে। পথচারীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

২০২২ সালে সিলেট অঞ্চলে স্মরণকালের বন্যার পানিতে তলিয়ে সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।  

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) জগন্নাথপুর কার্যালয় সূত্র জানায়, জগন্নাথপুর-ভায়া চিলাউড়া-স্বজনশ্রী সড়কটির দৈর্ঘ্য ৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে চিলাউড়া বাজারের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে সমধল নদীর সীমানায় প্রায় আড়াই কিলোমিটার আরসিসি ঢালাই। সমধল নদীতে সেতু না থাকার কারণে ইসমাইলচক-স্বজনশ্রী অংশে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ২০২২ সালের বন্যায় আড়াই কিলোমিটার আরসিসি ঢালাই ছাড়া জগন্নাথপুর থেকে চিলাউড়া বাজার পর্যন্ত যোগাযোগ রক্ষাকারী বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

জগন্নাথপুর উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় বলছে, রাস্তার দু’পাশের ব্লক অপসারণ করে পুরো সড়ক সংস্কার করতে হবে। এতে ব্যয় হবে আনুমানিক ১০ কোটি টাকা।

সরেজমিনে রবিবার (৪ মে) দেখা যায়, সড়কের ৯ কিলোমিটারের মধ্যে ৫ কিলোমিটার অংশের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং ও পিচ উঠে ইটের খোয়া বেরিয়ে গেছে। স্থানে স্থানে গভীর গর্ত। সড়কের জগন্নাথপুর পৌর এলাকার ইকড়ছই, বৈঠাখালি সেতুর সম্মুখসহ আরও কয়েকটি স্থানে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বৃষ্টি হলেই সড়কের এসব গর্তে পানি জমে। ভাঙা রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে লক্কড় ঝক্কড় করে এঁকেবেঁকে যানবাহন চলাচল করছে। রাতের আধারে চলাচল করতে পথচারীরা পড়ছেন ভোগান্তিতে।

স্থানীয়রা জানান, সড়কটি জগন্নাথপুর উপজেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ মাধ্যম। ২০২২ সালে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে পাথর ও বালুবাহী ট্রাক যাতায়াতে সড়কটির আরো করুণদশা তৈরি হয়। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন উপজেলার হলদিপুর-চিলাউড়া ইউনিয়ন, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলাসহ জগন্নাথপুর পৌর এলাকার ইকড়ছই, ছিলিমপুর, ভবানীপুর, যাত্রাপাশা, শেরপুর ও কবিরপুরের শিক্ষার্থী, কর্মজীবীসহ হাজার হাজার জনসাধারণ উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। তারা প্রতিদিনই ভোগান্তি নিয়ে যাতায়াত করছেন। এছাড়া ধান কাটার মৌসুমে উপজেলার প্রধান দুটি নলুয়ার ও মইয়ার হাওরে কৃষকেরা নিয়মিত যাতায়াত করছেন। সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হাওর থেকে ধান আনতে গিয়ে তারা ভোগান্তিতে পড়ছেন। রাস্তাটি মেরামত করাতো দূরের কথা, ইট-সুরকি দিয়ে গর্তগুলো ভরাটের চেষ্টা ও নেই।

অটোরিক্সা চালক সুজন মিয়া বলেন, ‘দুর্ঘটনার ভয়ে আমাদেরকে সতর্ক হয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। গর্তে পড়ে গাড়ি বিকল ও অসহনীয় দুর্ভোগ নিয়ে যাত্রীরা যাতায়াত করছেন।

চিলাউড়ার (মাঝপাড়া) নিবাসী হিরন মিয়া বলেন, ‘হলদিপুর-চিলাউড়া ইউনিয়নবাসীর যাতায়াতের একমাত্র সড়কটি ভাঙ্গনের কারণে আমরা ভোগান্তিতে আছি। আসা-যাওয়ার পথে প্রায় সময় হলদিপুরের মোড়ায় ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে।

জগন্নাথপুর পৌর এলাকার ছিলিমপুরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী আকমল হোসেন বলেন, ‘২০২২ সালের বন্যায় সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ভারি মালবাহী ট্রাক চলাচলে আরও দুর্দশা ঘটায়।

এ বিষয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সোহরাব হোসেন বলেন, ‘২০২২ সালের বন্যার পর ওই সড়ক মেরামতের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। কাজটি কবে নাগাদ অনুমোদন হবে তা এখন বলা সম্ভব নয়, তবে চেষ্টা চলছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত