নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ০১:১৭

ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসকের সাথে কী ঘটেছিলো রোগীর স্বজনের?

রোগীর স্বজনকে চিকিৎসকের লাথি, ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি

তেড়ে গিয়ে রোগীর এক স্বজনকে লাথি দিচ্ছেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের এক চিকিৎসক- এমন একটি ভিডিও সোমবার ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওতে দেখা যায়, কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে সাদা এপ্রোন পরিহিত এক চিকিৎসক তেড়ে গিয়ে লাথি মারছেন এক ব্যক্তিকে। এই ভিডিও ছড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগারেযাগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা দেখা দেয়। ওই চিকিৎসকের শাস্তিরও দাবি ওঠে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালের সার্জারি ইউনিটের ৩১ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন জুবেল আহমদ। রোববার তাকে হাসপাতালে দেখতে আসেন তার বন্ধু মিজান আহমদ। মিজান আহমদের সাথেই হাসপাতালের চিকিৎসক তন্ময় দেবনাথের সাথে এই অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি ঘটে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, চিকিৎসক তন্ময় দেবনাথ স্নাতকোত্তর ‘ফেজ-বি’–এর আবাসিক শিক্ষার্থী। হাসপাতালের পরিচালক ঘটনাটি তদন্তের জন্য একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন। একইসঙ্গে, ডা. তন্ময় দেবনাথকে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

রোববারের ঘটনার বিবরণ দিয়ে ভুক্তভোগী মিজান আহমদ জানান, ‘‘জুবেলের এপেন্ডিসাইটিসের ব্যাথা বেড়ে যাওয়ায় ওয়ার্ডে দায়িত্বরত ডাক্তারকে ডাক দেই। এসময় ডাক্তার আরেকজন রোগী দেখতে অন্য ওয়ার্ডে চলে যান। পরবর্তীতে ডাক্তার আসার পর আবার যখন আমি ডাক দেই তিনি বলেন, ‘এই ভাবে ডাকছেন কেনো’। আমি বললাম, ‘স্যার বলেই তো ডাকলাম’। এনিয়ে কথা কাটাকাটি হলে ডাক্তার ক্ষেপে গিয়ে আমাকে থাপ্পর ও লাথি দেন।’’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চিকিৎসক তন্ময় দেবনাথ বলেন, আমি তখন ইমার্জেন্সি একটা রোগী দেখতে অন্য ওয়ার্ডে যাচ্ছিলাম। তখন ৩১ নং ওয়ার্ডে রোগীর বেডে পায়ের উপর পা তুলে শুয়ে দুজন আমাকে ডাকাডাকি করছিলো। অন্য ওয়ার্ড থেকে ফিরে আসার পরও তারা একই ভঙিতে আমাকে ডাকাডাকি করছিলো।

তন্ময় বলেন, ওই বেডের কাছে গিয়ে এভাবে কেন ডাকাডাকি করছেন জানতে চাইলে তারা তর্ক শুরু করে দেয়।

তবে লাথি দেয়া ঠিক হয়নি উল্লেখ করে ওই চিকিৎসক বলেন, অশোভন আচরণ ও গালি দেওয়ায় মেজাজ হারিয়ে ফেলি। কিন্তু কাজটা ঠিক হয়নি। এজন্য আমি অনুতপ্ত ও দুঃখিত। পরবর্তীতে রোগীর গার্ডিয়ানের কাছে গিয়ে সব কিছু বুঝিয়ে বললে তারা বিষয়টা বুঝতে পেরেছেন।

ঘটনার সময় ওই ওয়ার্ডেই কর্মরত ছিলেন আরেক চিকিৎসক রুবেল আহমেদ। ঘটনার ব্যাপারে বলেন, রোগীর এটেন্ডেস যেভাবে ডাক্তারকে ডেকেছিলেন তাদের ডাকার ভঙিটা ভালো ছিলো না। পরবর্তীতে যখন ডাক্তার তন্ময় যখন অন্য ওয়ার্ড থেকে ফিরে তাদের কাছে আসে তখন তাকে গালাগালি করা হয়। এসময় তন্ময় মেজাজ হারিয়ে ফেলেন এবং এই ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি ঘটন করা হয়েছে জানিয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ঘটনায় ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা ৭ কর্মদিবসে রিপোর্ট দিবেন।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় চিকিৎসক তন্ময় দেবনাথকে আপাতত তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত