গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি

২৮ নভেম্বর, ২০১৬ ১৭:৪৬

গোয়াইনঘাটে সাবেক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

গোয়াইনঘাটে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করেছেন ১নং রুস্তমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ড সদস্য মো. কামাল হোসেন।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে কামাল হোসেন এসব অভিযোগ করেন।

মো. কামাল হোসেন অভিযোগপত্রে বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমার সাথে পরাজিত হয়ে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক ইউপি সদস্য নুরুল আমিনসহ একটি মহল নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।

নুরুল আমিনের ভাগিনা এম. শফিক ও তার স্ত্রী নুরুন নেছা ওই ষড়যন্ত্রের মূল কারিগর। নির্বাচনে নুরুল আমিনের চেয়ে ৮ শত ভোট বেশি পেয়ে আমি জয়লাভ করার পর থেকে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে একের পর এক ষড়যন্ত্রে আমাকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এতে ব্যহত হচ্ছে নাগরিক সেবা। এতে আমি বারবার মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছি। নুরুল আমিনের ভাগনা শফিক ও তার আপন ভাতিজি নুরুন নেছা নিকটাত্মীয় হওয়ায় দু’জনই আমাকে নানা ফাঁদে ফেলতে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করছেন। নির্বাচনে আমি জয় লাভের পর থেকে সাবেক মেম্বার নুরুল আমিনের প্ররোচনায় শুরু হয় আমাকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও ইউপি সদস্য পদ থেকে সরানোর বিভিন্ন কলাকৌশল।

ইউপি সদস্য কামাল হোসেন আরো জানান, আমি সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী ২২ জুলাই সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে গোয়াইনঘাট উপজেলাধীন রুস্তমপুর ইউনিয়নের গরুর ঘাট পীরের বাজার নামক স্থানে বিট/কাটাল স্থাপনের আবেদন করি। যাহা ভারত থেকে আসা গবাদি পশুর বিপণন, পরিবহন, সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার জন্য করিডোর বা বিট/কাটাল স্থাপনের নিমিত্তে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক স্কেচম্যাপ সহ উপজেলা চোরাচালান নিরোধ সমন্বয় কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক সুনির্দিষ্ট সুপারিশ/মতামত সহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অনুরোধ করা হয়। উল্লেখিত বিষয়ের আলোকে সিলেটের কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবরে বিট/কাটাল স্থাপনের সাথে সংশ্লিষ্ট যাবতীয় প্রাপ্তির উপর ১৫% হারে প্রদানের শর্তে মতামত দেন। এ মতামত পাওয়ার পর থেকে ওই মহলটি বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ করতে শুরু করেন।

তিনি জানান, কুচক্রী ওই মহলটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ করেন। আমার বাবা মরহুম তালেব আলী বীর মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় সরকারী সুযোগ সুবিধা আমরা গ্রহণ করি। এতেও তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে দুনিয়া থেকে সরানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। আমি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শঙ্কায় দিন-রাত অতিক্রম করছি। এমতাবস্থায় স্থানীয় প্রশাসনসহ সর্ব মহলে এই কুচক্রী মহলকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।

কামাল হোসেন আরো জানান, সর্বশেষ সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আমার উপর মিথ্যা ও বিভ্রান্তি মূলক অভিযোগ এনেছেন যা পূর্ব ষড়যন্ত্রের একটি অংশ। নুরুন নেছা সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় গরুসহ বিভিন্ন চোরাচালানের সাথে আমাকে জড়িয়ে যে বক্তব্য প্রদান করেছেন তা আদৌ সত্য নয়। তিনি সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করেন, উপজেলা প্রশাসনের সাথে না কি আমার আতাত রয়েছে। আমি না কি চাঁদা আদায় করি। এটি ডাহা মিথ্যা কথা। এ রকম চাঁদাবাজির সাথে আমি জড়িত হলে তদন্ত সাপেক্ষে আমার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আমি তাহা সাদরে গ্রহণ করব।

এ সময় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. আব্দুল হক, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সম্পাদক বাবু সুবাস চন্দ্র পাল সানা, রুস্তমপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মাশুক আহমদ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক এনছাদ আলী, রুস্তমপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আব্দুল হাকিম, মখলিসুর রহমান প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত