নিজস্ব প্রতিবেদক

০৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১৩:১৭

‘ছাত্ররা খাদিজাকে রক্ষা করতে গেলে বদরুল তাদের চাপাতি নিয়ে ধাওয়া করে’

আদালতে খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলার স্বাক্ষী

সিলেটে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমের চাপাতির কোপে কলেজছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিস হত্যাচেষ্টার একজন প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী ফাহমিদা এলাহী বৃষ্টি আদালতে জানিয়েছেন, "কিছু ছাত্র খাদিজাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে বদরুল তাদের চাপাতি নিয়ে ধাওয়া করে।"

আজ সোমবার (৫ ডিসেম্বর) সিলেটের চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে স্বাক্ষ্য দেয়ার সময় বৃষ্টি একথা জানান। তিনি এই মামলার দশম স্বাক্ষী হিসাবে স্বাক্ষ্য প্রদান করেন।

পরে ঐদিনের হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সিলেটটুডে টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বৃষ্টি বলেন, "আমার ক্যাম্পাস কলংকিত করেছে বদরুল। আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।"

বৃষ্টি বলেন, 'খাদিজার উপর হামলার পর আমি তার ব্যাগ কুড়িয়ে নিয়ে কলেজ অফিসে জমা দেই। এরপর ব্যাগ থেকে নাম্বার সংগ্রহ করে আমিই খাদিজার পরিবারকে প্রথম হামলার সংবাদটি জানাই।'

আজ এমসি কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও আহত অবস্থায় খাদিজাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কলেজ শিক্ষার্থী ইমরানও আদালতে স্বাক্ষ্য দেবেন।

এর আগে বেলা ১১ টার দিকে বদরুলকে আদালতে তোলা হয়। খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলায় আজ মোট ১৮ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করার কথা রয়েছে।

গত ২৯ নভেম্বর চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৫ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেন সিলেটের চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আাদালতের বিচারক মো. সাইফুজ্জামান হিরো। ওইদিন একমাত্র বদরুল আলমকে (২৯) অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র গঠন করা হয়।

এ মামলায় সাক্ষী মোট ৩৭ জন। এর বাইরে মামলার বাদীও সাক্ষ্য দেবেন। মামলার চার্জশিটে দ্বিতীয় সাক্ষী হচ্ছেন খাদিজা বেগম নার্গিস। আজ প্রথমদফার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে পরবর্তীতে টানা সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন।

আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খাদিজার ওপর হামলার পর মামলা হওয়ার এক মাস পাঁচ দিনের মাথায় শাহপরান থানার উপপরিদর্শক হারুনুর রশিদ গত ৮ নভেম্বর অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালতে দাখিল করেন। ১৫ নভেম্বর আদালতে অভিযোপত্রের শুনানি শেষে তা গৃহীত হয়।

উল্লেখ্য, গত ৩ অক্টোবর সিলেট এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমের চাপাতির কোপে গুরুতর আহত হন খাদিজা। প্রথমে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর সেখান থেকে ৪ অক্টোবর তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে এনে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়। স্কয়ার হাসপাতালে প্রথম দফায় নার্গিসের মাথায় ও পরে হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়। তার অবস্থার একটু উন্নতি হলে লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়। এরপর আইসিইউ থেকে এইসডিইউ-তে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে ২৬ অক্টোবর তাকে কেবিনে নেওয়া হয়। এরপর আবারো মাথায় ও হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়। বর্তমানে অনেকটা ভালো অবস্থায় রয়েছেন খাদিজা।

হামলার দিন ঘটনাস্থল থেকে বদরুল আলম আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে জনতা। আদালতে হামলার দায় স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছেন বদরুল। হামলার দায়ে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিস্কার করেছে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত