নবীগঞ্জ প্রতিনিধি

১০ ডিসেম্বর, ২০১৬ ২০:১৬

অনুপ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের দাবিতে নবীগঞ্জে মানববন্ধন

নবীগঞ্জে ৭ম শ্রেণীর ছাত্র অনুপ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসির দাবীতে বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিবিয়ানা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র কিশোর অনুপ দাশের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে বিশাল মানববন্ধন করেছে স্থানীয় স্কুল, কলেজ, জনপ্রতিনিধি ও যুবসমাজের নেতৃবৃন্দরা।

শনিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে র্কীর্তিনারায়ন কলেজের সামনে রাস্তায় সুশীল সমাজের প্রতিনিধি নিহত অনুপের সহপাঠীরা মানববন্ধনে ফেস্টুন, ব্যানার, অনুপের ছবি ও ঘাতক খুনিদের ফাঁসি চাই সম্মেলিত প্লে কার্ড নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।

মানববন্ধন শেষে এক পথ সভায় বক্তব্য রাখেন, নবীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বড় ভাকৈর ইউনিয়নের হলিমপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্রী মনোরঞ্জন দাশ, নিহত অনুপের মা উষা রাণী দাশ, তার বড় বোন এস.এস.সি পরীক্ষার্থী সুমি রানী দাশ, অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক শুভাস চন্দ্র দাশ, কীর্তি নারায়ণ কলেজের ইংরেজি প্রভাষক টিটু দাশ, বিবিয়ানা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিমল কান্তি দেব, ইউপি সদস্য মাহমুদ মিয়া, শুশাংক দাশ, ইউসুফ আহমেদ প্রমুখ।

বক্তারা অনুপ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেন। নিহত অনুপের মা উষা রানী তার একমাত্র পুত্র হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানান।

অনুপের বড় বোন এস.এস.সি পরীক্ষার্থী সুমি রানী দাশ কান্না জড়িত কণ্ঠে তার বক্তব্যে বলে, আমার বাবাকে গত বছর পাষণ্ডরা হত্যা করেছে! কোন বিচার পাই নাই! এ বছর আমার ভাইকে মেরে স্যানেটারী রিং ল্যাট্রিনের ভিতরে ফেলে রাখে। এমন কথা বলা মাত্রই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে সুমী দাশ। সে আর কথা বলতে পারে না। সুমী তার বাবা ও ভাই হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ফাঁসির দাবি করে।

উল্লেখ্য, নবীগঞ্জ উপজেলার বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়নের মৃত অন্তু দাশের পুত্র অনুপ দাশ (১৩)। ৩০ নভেম্বর রাতে হলিমপুর বাজারস্থ নিজ দোকান থেকে বাড়ি যাবার পথে নিখোঁজ হয়। বাড়ির লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে হলিমপুর গ্রামের ভূষণ দাশের দোকানের উত্তর-পূর্ব পাশের খালে কিশোর অনুপ দাশের ব্যবহৃত চাঁদর ও জুতা পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে ১ ডিসেম্বর নিখোঁজ অনুপের মা উষা রানী দাশ নবীগঞ্জ থানায় একটি জিডি এন্টি দায়ের করেন। ৩ ডিসেম্বর বিকালে হলিমপুর গ্রামের গোপাল দাশ (৫০), অধীর দাশ (৫৫), পিন্টু দাশ (৪২) কে সন্দেহজনক ভাবে পুলিশ আটক করে।
এ ব্যাপারে গত শনিবার নবীগঞ্জ থানায় ৩৬৪/৩৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন অনুপ দাশের মা উষা রানী দাশ। ওই দিন বিকেলে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে হলিমপুর গ্রামের ধনাই দাশের পুত্র দিপংকর দাশকে পুলিশ আটক করে।

আটককৃত দিপংকর দাশকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে দিপংকর ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী একই গ্রামের জ্যোতিময় দাশের বাড়ির স্যানেটারী রিং ল্যাট্রিনের ভিতর থেকে অনুপ দাশের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

অনুপ দাশের পিতা অন্তু দাশ বিগত ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে বাড়ি থেকে বের হলে আর তিনি ফিরে আসে নি। ঘটনার দু’দিন পর বাড়ির পশ্চিমের বিবিয়ানা নদীর পারে অন্তু দাশের লাশ পাওয়া যায়। প্রায় দেড় বছরের মাথায় একই ভাবে নিখোঁজের ৪ দিন পর পুত্র কিশোর অনুপ দাশের মৃতদেহ উদ্ধার হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত