দেবকল্যাণ ধর বাপন

১১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০১:২৩

মিয়ানমারে নির্যাতন : পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য সিলেট থেকে যাচ্ছে ত্রাণ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য সিলেটে ত্রাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। সিলেট ইমাম সমিতির উদ্যোগে নগরীর বিভিন্ন মসজিদে এবং বিভিন্ন মাদ্রাসার উদ্যোগে পৃথকভাবে এসব ত্রাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে সংগৃহিত ত্রাণসামগ্রীর কয়েকটি চালান কক্সবাজারের সীমান্তবর্তী এলাকায় পাঠানো হয়েছে। যার মধ্যে নগদ অর্থ, পোষাক ও খাদ্যসামগ্রী রয়েছে।

গত ৯ অক্টোবর থেকে রাখাইনে সেনাবাহিনীর চলমান অভিযানে প্রায় ২১ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে দাবি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার।

এসব রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাহায‌্যার্থে বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগরীর উদ্যোগে গত ২ ডিসেম্বর থেকে নগরীতে তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

জাতীয় ইমাম সমিতির উদ্যোগে নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের সকল মসজিদে মসজিদে নগদ অর্থসহ, নতুন-পুরাতন কাপড় সংগ্রহের কাজ  শুরু হয়। এতে বিপুল সাড়া মিলেছে বলেও জানিয়েছে ইমাম সমিতির নেতারা।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ক্বারী সিরাজুল ইসলাম সিলেটটুডে টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগরের উদ্যোগে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী সংগ্রহ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, জাতীয় ইমাম সমিতি টেকনাফ ও কক্সবাজারের সহযোগিতায় আমরা সেখানে ত্রাণ সামগ্রী ও নগদ অর্থ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে বিতরণ করবো।

ইতোমধ্যে আমাদের ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সংগৃহিত ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন, বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আমরা আশা করছি যে মোট ১০ লক্ষ টাকার অধিক তহবিল সংগ্রহ করতে আমরা সক্ষম হবো। ইতিমধ্যে আমরা ৪ কার্গো শীতবস্ত্র সেখানে প্রেরণ করেছি।

এদিকে বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগর ছাড়াও জামেয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া কাজির বাজার, সিলেটের উদ্যোগেও সংগ্রহ করা হচ্ছে নগদ অর্থসহ অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী।

এ ব্যাপারে কাজির বাজার মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা হাবীবুর রহমানের ছেলে এবং এ মাদ্রাসার ছাত্র তারিক বিন হাবীব সিলেটটুডে টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,  আমাদের ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কাছে নগদ অর্থ পৌঁছে দিয়ে সিলেট ফিরে এসেছেন। তবে কি পরিমাণ আর্থিক সাহায‌্য প্রদান করা হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে বলতে পারেননি তিনি।

উল্লেখ্য, গত ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের তিনটি সীমান্ত পোস্টে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’ হামলায় নয় সীমান্ত পুলিশ নিহত হওয়ার পর রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলিম অধ্যুষিত জেলাগুলোতে শুরু হয় সেনা অভিযান।

রাখাইন রাজ্যে যা হয়েছে, তা মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ে পড়তে পারে বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ভাষ্য।

অভিযানে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলে এলেও নির্যাতনের খবর অস্বীকার করে যাচ্ছে মিয়ানমার।

গত কয়েক দশকে  ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের ভার বহন করে আসা বাংলাদেশ সরকার নতুন করে শরণার্থী না নেওয়ার অবস্থান নিয়েছে। সেজন‌্য সীমান্তে কড়া পাহারা চলছে। তবু
 সীমান্তের দূর্গম এলাকা দিয়ে প্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছে না। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়ারও দাবি ওঠেছে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত