হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

১১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১৮:২৭

হবিগঞ্জে মোটরসাইকেলের কাগজ দেখতে চাওয়ায় থানায় ছাত্রলীগ নেতাদের হামলা

হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় ভাংচুর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে ছাত্রলীগ নেতারা। মোটরসাইকেলের কাগজ দেখতে চাওয়াকে কেন্দ্র করে রোববার দুপুরে ছাত্রলীগ নেতারা এ হামলা চালায়।

এ ঘটনায় সহকারী পুলিশ সুপারের গাড়ি ভাঙচুর ও একজন উপপরিদর্শক (এসআই) আহত হয়েছেন। তবে হবিগঞ্জ থানার ওসি এঘটনাকে 'ভুলবোঝাবুঝি' হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের মতে, এটি 'একবারেই তুচ্ছ ঘটনা'।  যদিও পুলিশ ও ছাত্রলীগের এই ‘ভুল বোঝাবুঝি’ সমাধান করতে পুলিশকে ছয় রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়তে হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনের সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে অবৈধ মোটরসাইকেল আটক অভিযান চালায় সদর থানা পুলিশ। এসআই শাহিদ এ অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। বেলা পৌনে ২টার দিকে তিনটি মোটরসাইকেলে তিনজন করে মোট নয়জন আরোহী চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় পুলিশ তাদের আটক করে কাগজপত্র দেখতে চায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তারা অশোভন আচরণ করে। এ নিয়ে পুলিশের সাথে তাদের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মোটরসাইকেল আরোহীরা থানায় গিয়ে ভাঙচুর করে। এ সময় থানার এসআই অরূপ কুমার আহত হন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, কাগজ দেখতে চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হওয়া মোটরসাইকেল আরোহীদের সকলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। তারা এবং তাদের অনুসারীরা মিলে থানায় ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুর করেন। থানা থেকে ফেরার পথে শহরের পুরাতন হাসপাতাল সড়কে সহকারী পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়ের গাড়িতেও ভাঙচুর করে তা্রা। তবে এ সময় তিনি গাড়িতে ছিলেন না।

হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ স ম শামসুর রহমান জানান, এ সময় ছয়টি গুলিবর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

হবিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিনুল হক বলেন, ‘কিছু ছেলেপেলে মেইনরোড থেকে থানায় ঢিল মারে। এটা একটা ভুল বোঝাবুঝি। পুলিশের প্রস্তুতি ছিল না। এরা কারা আমরা খোঁজ নিচ্ছি।'

তিনি বলেন, মোটরসাইকেলের কাগজ দেখতে চাওয়ায় পুলিশের সাথে অশোভণ আচরণকারীর ছাত্রলীগের কর্মী ছিল বলে শুনেছি। ওরাই থানায় এসেছিল।’

হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুর রহমান বলেন, ‘থানায় কিছু ছেলেপেলে ঢিল মারে। মোটরসাইকেলে করে তিনজন যাচ্ছিল। পুলিশ বলে দুজন করে যেতে হবে। পরে এরা উত্তেজিত হয়ে থানায় যায়। থানার ওসি পরে ওদের সাথে কথা বলে বিষয়টি ম্যানেজ করে।’

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুকিতুল ইসলাম বলেন, ‘এটা একদমই ছোটখাটো ঘটনা। ছাত্রলীগের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানের পর মোটরসাইকেলে করে ছাত্রলীগের কর্মীরা ফিরছিল। পরে পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। কিন্তু পরে আমরা থানায় গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বসে মিউচুয়াল (মিটমাট) করে ফেলেছি। ভুল বোঝাবুঝির কারণে এটা হয়েছে। আর কিছু না।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত