মো. মুন্না মিয়া, জগন্নাথপুর

০৪ জুন, ২০১৭ ০০:১৩

হাওরের বন্যায় নিঃস্ব পরিবার, জগন্নাথপুরে কলেজে ভর্তি হতে পারছেন না অনেক শিক্ষার্থী

সুনামগঞ্জের প্রবাসী অধ্যুষিত উপজেলা হচ্ছে জগন্নাথপুরে সাম্প্রতিক বন্যায় ছোট-বড় সব হাওর তলিয়ে যাওয়ার পর আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন এ অঞ্চলের মানুষ। নিম্নবিত্ত পরিবারের লোকজন তাদের চাহিদা পূরণে যেকোনো ধরনের কাজে নিয়োজিত থাকতে পারলেও এসব পারেন না মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে অনেকের জন্য। বিভিন্ন পরিবারের স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায়ও ঘটছে ব্যঘাত। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্টানে অর্থের অভাবে ভর্তি হতে পারছেন না অনেকে। এমন সমস্যায় অনেকের লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম হতে চলেছে।

জগন্নাথপুর পৌর শহরের কেশবপুর এলাকায় অবস্থিত জগন্নাথপুর ডিগ্রি কলেজ। এ কলেজে সম্প্রতি শেষ হয়েছে একাদশ শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষা। ওই পরীক্ষার ফলাফলও ইতোমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। পরীক্ষায় সকল অকৃতকার্য ও কৃতকার্যরা দ্বাদশ শ্রেণীতে জরিমানা সহকারে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলেও টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারছেন না মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, গত ১ জুন থেকে ২ জুন পর্যন্ত দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ভর্তির দিন ধার্য করা হয়। এ দু'দিনে একজন ছাত্রও ভর্তি হননি। ছাত্রীদের মধ্যে প্রথম দিনে এক অবস্থাপন্ন রাজনৈতিক নেতার মেয়ে ছাড়া আর কোনো ছাত্রী ভর্তি হননি।

দ্বাদশ শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, আমাদের এলাকা হচ্ছে কৃষির উপর নির্ভরশীল। আমরা কৃষিতে যে ফসল পাই তা দিয়ে সারা বছর চলি। কিন্তু বন্যায় তলিয়ে নিয়ে গেছে আমাদের সব ফসল। এখন আমরা কিভাবে খেয়ে বাঁচব এমন চিন্তার মধ্যে রয়েছি। তারপরও আমাদের পড়ালেখার স্বার্থে পরিবারের অভিভাবকরা ধার-দেনা করে বার্ষিক পরীক্ষার ফি সহ কলেজের পাওনা আদায় করেন। কিন্তু পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১০-১৫ দিন পর আবার দ্বাদশ শ্রেণিতে ভর্তির চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। এসব চাপ সামলাতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

তারা বলেন, আমাদের অনেক সহপাঠীরা টাকার অভাবে পরীক্ষা দিতে পারেনি। আমাদেরও একই পরিণতি হওয়ার পথে। আমাদের দ্বাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে হলে সেশন ফি ২ হাজার টাকা, মাসিক বেতন ২ শত টাকা এবং অকৃতকার্য প্রতি বিষয়ে ৫০ টাকা করে দিতে হবে। তা আমরা পারছি না।

কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কথা সঠিক নয় বলে দাবি করে কলেজের অধ্যক্ষ এম আব্দুন নূর বলেন, আমি কোনো কাজে নিজে হস্তক্ষেপ করি না। আমাকে কমিটির সিদ্ধান্তের উপর কাজ করতে হয়। কমিটির সিদ্ধান্তের বাইরে আমি কাজ করিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত