নবীগঞ্জ প্রতিনিধি

০৮ জুন, ২০১৭ ১৭:৩৯

নবীগঞ্জে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অপসারণ দাবি, সমন্বয় সভা বর্জন

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ৮ নং সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাজু আহমদ চৌধুরী ও তার সহোদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরীর বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলিনা পারভীনের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা জিডি এন্ট্রির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকালে নবীগঞ্জ উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভা বর্জন করেছেন ১৩ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ নারী সদস্যরা।

সমন্বয় সভা বর্জন করে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অপসারণসহ জিডি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা। মিথ্যা জিডি প্রত্যাহার করা না হলে আইনশৃংখলা কমিটির সভা বর্জনসহ কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুমকি দিয়েছেন বর্জনকারীরা।

পরে তাৎক্ষনিকভাবে উন্নয়ন সমন্বয় সভা স্থগিত করেন কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী।

এদিকে, এ ঘটনা পরিপ্রেক্ষিতে আগামী শনিবার নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ এক জরুরী সভা আহ্বান করেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা হলরুমে নবীগঞ্জ উপজেলা মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট আলমগীর চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নবীগঞ্জ-বাহুবল আসনের এমপি এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজিনা সারোয়ার, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলিনা পারভীন সহ সকল সদস্যবৃন্দ।

সভার শুরুতেই নবীগঞ্জ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি মো. ইজাজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুর রহমান মুকুল বক্তব্য রাখেন। তারা বক্তব্যে বলেন, নবীগঞ্জ ৮ নং সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাজু আহমদ চৌধুরী ও তার সহোদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরীর বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলিনা পারভীন ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা জিডি এন্ট্রি করেছেন। তার দায়েরকৃত জিডি ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রত্যাহার করা না হলে উন্নয়ন সমন্বয় সভা ও আইনশৃংখলা কমিটির সভা বর্জন করা হবে।

এই বলে সভা বয়কট করে সভাস্থল ত্যাগ করেন তারা। এর পর ১৩ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী সদস্যরাও সভাস্থল বর্জন করে চলে যান।

পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের রুমে সবাই আবার এক সভায় মিলিত হন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগম, ইউপি চেয়ারম্যান ইজাজুর রহমান, ইমদাদুর রহমান মুকুল, এড. জাবিদ আলী, বজলুর রশিদ, আশিক মিয়া, আবু সিদ্দিক, নজরুল ইসলাম, মুহিবুর রহমান হারুন, সত্যজিত দাশ, আলী আহমদ মুসা, আবু সাঈদ এওলা, ছাঈমুদ্দিন, সাজু আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট আলমগীর চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চেয়ারম্যানগন উন্নয়ন সমন্বয় সভা বর্জন করার কারনে আমি সভা স্থগিত করেছি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। মিথ্যা জিডি এন্ট্রি প্রত্যাহার করা না হলে চেয়ারম্যানরা উন্নয়ন সমন্বয় ও আইনশৃংখলা কমিটির সভায় যোগদান করবেন না বলেছেন এবং মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেছেন ।

নবীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলিনা পারভীন সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এব্যাপারে বক্তব্য দিতে অপারকতা প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, গত ৩১ মে রাতে নবীগঞ্জ উপজেলা সদর ৮ নং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাজু আহমদ চৌধুরী ও তার সহোদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরীর বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলিনা পারভীন তাকে হুমকি প্রদানের অভিযোগে একটি জিডি এন্ট্রি করেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলিনা পারভীনের অপসারণ দাবি করে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা একাধিক স্ট্যাটাস দেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত