হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

১৩ আগস্ট, ২০১৭ ১৯:১৮

বাহুবলে দুই খুনের ঘটনায় ৩ শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা, জনশূন্য গ্রাম

বাহুবলে মসজিদের কমিটি গঠন ও ইমাম নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে ২জন নিহতের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৩শতাধিক লোকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শনিবার রাত ১টার দিকে এসআই আব্দুর রহিম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ৭৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো আড়াইশ জনকে আসামী করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে জন শূন্য হয়ে পড়েছে পুরো মুগকান্দি গ্রামটি।

জানা যায়, বাহুবল উপজেলার সাতকাপন ইউনিয়নের মুগকান্দি জামে মসজিদের কমিটি গঠন ও ইমাম পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের বিরোধ চলছিল। একপক্ষ বর্তমান ইমাম ফরিদ আখঞ্জীর পরিবর্তন চায়। অপরপক্ষ ওই ইমামের পক্ষে অবস্থান নেয়। এ অবস্থায় গত শুক্রবার জুমার নামাজে সাতকাপন ইউপি চেয়ারম্যান মুগকান্দি গ্রামের আবদাল মিয়া আখঞ্জি গ্রুপের সোহেল মিয়ার সঙ্গে একই গ্রামের শফিক মাস্টারের বাকবিতন্ডা হয়। এর জেরে বাদ জুমা উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ওই সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ৫০ জন।

পরদিন শনিবার ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের দুই জন নিহত হয়। নিহতরা হলেন পূর্ব মুগকান্দি গ্রামের লন্ডনি বাড়ির ছাবু মিয়ার ছেলে লন্ডনপ্রবাসী কবির মিয়া এবং আখঞ্জি বাড়ির পক্ষের মৃত মুসলিম মিয়ার ছেলে মতিন মিয়া। সংঘর্ষে আহত হন শতাধিক।

হবিগঞ্জের সিনিয়র পুলিশ সুপার (সার্কেল) রাসেলুর রহমান মামলার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আমাদের অভিযান চলবে।

গ্রামটি ঘুরে দেখা যায়, হাড়ি পাতিল গরু ছাগল নিয়ে পুরুষদের পাশাপাশি গ্রাম ছাড়ছে মহিলারাও। গ্রামের রাস্তায় পুলিশের টহল। পুরো গ্রাম ঘুরে এলাকার কোন পুরুষ মহিলাকে পাওয়া যায়নি। ঘরের দরজা বন্ধ। অনেক বাড়িতে কাচা ধান বারিন্দা ও উঠানে পড়ে রয়েছে। যেন দেখার কেউ নেই। তবে দু একটি ঘরের দরজা খোলা থাকলেও যে মহিলাদেরকে ঘরে পাওয়া গেছে তারা ওই গ্রামের নয়। কেউ মেয়ের বাড়ি, কেউ মামার বাড়ি, কেউ ফুফুর বাড়ি পাহাড়া দিতে এসেছে।

মৌরি গ্রামের বৃদ্ধ ছায়েব আলী জানান, আমার মেয়ের বাড়ী এই গ্রামে (মুগকান্দি)। মেয়ের জামাই দেশের বাইরে থাকে। আমি বেয়াইনের খবর নিয়ে আইয়া দেখি সবাই ঘর তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত