শাকিলা ববি, হবিগঞ্জ

২৯ আগস্ট, ২০১৭ ২২:০৪

আসছে দুর্গা পূজা, প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত হবিগঞ্জের মৃৎশিল্পীরা

ছবি: আরাফাত তারিফ

“আশ্বিনের মাঝামাঝি উঠিল বাজনা বাজি, পূজার সময় এল কাছে।” রবীন্দ্রনাথের কবিতার মতই এই ভাদ্র শেষে আশ্বিনে শুরু হবে বাঙ্গালী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।

মূলত আনুষ্ঠানিক ভাবে মহালয়ার দিন থেকে দেবীর আগমনী উৎসব শুরু হয়। কিন্তু মৃৎশিল্পীদের গৃহে ইতিমধ্যে আগমন ঘটেছে দেবী দুর্গার। তাই বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন মূর্তি কারিগররা। মূর্তির মূল কাঠামো তৈরি করা হয়েছে ভাদ্র মাসের শুরু থেকেই। এখন চলছে মাটির প্রলেপের কাজ।

হবিগঞ্জ পৌর এলাকায় ৩৩টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হয়। এই মণ্ডপগুলোতে বেশির ভাগ মূর্তি আসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী এলাকা থেকে। তাই স্থানীয় মূর্তি কারিগররা থাকেন হতাশাগ্রস্ত।

বর্তমানে পৌর এলাকায় প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন শুধুমাত্র কার্তিক পাল। তার সাথে কথা বলে জানা গেল, তিনি ১০টি মূর্তির কাজ করছেন। তবে সব গলো পৌর এলাকার জন্য না। কিছু মূর্তি শহরের আশেপাশের কিছু গ্রামে যাবে।

শহরের পুরানবাজার এলাকার একটি দোকানের পিছনে গিয়ে দেখা যায়, দুর্গার প্রতিমা নির্মাণের কাজ করছেন মৃৎশিল্পী কার্তিক রৌদ্র পাল ও তার সহযোগীরা।

ছন বাঁশের কাঠামোতে মাটির ঢেলা ভেঙ্গে পানি মিশ্রিত করে প্রলেপ দিচ্ছেন। পাশেই একটি কাঠের চৌকির উপর শুকানোর জন্য রাখা হয়েছে দেবী দুর্গা সহ বিভিন্ন চরিত্রের মুখমণ্ডল। অত্যাচারী অসুরের মুখ মণ্ডলের হিংস্রতা ম্লান হয়ে যাচ্ছে দেবী দুর্গার মুখমণ্ডলের প্রফুল্ল হাসির শুভ্রতায়।

আবেগ, ভালবাসা, শুদ্ধতা দিয়ে মাটির ঢেলাকে দেবী দুর্গায় রূপান্তর করেন মৃৎশিল্পী কার্তিক রৌদ্র পাল। তিনি বলেন, আমরা কারিগরদের জন্য দুর্গাপূজা সন্নিকটে। হাতে সময় একবারে কম। মাটির প্রলেপের কাজ শেষ করে ফিনিশিং করতে হবে। তাছাড়া মূর্তি শুকানো নিয়ে ঝামেলায় আছি কারণ এখন এই রোদ এই বৃষ্টি। শুকানোর পর রং করে গ্রাহকদেরকে মূর্তি হস্তান্তর করতে হবে।

মূর্তি বানানোর পারিশ্রমিকের কথা বলতে গিয়ে তিনি অনেকটা আক্ষেপ করেই বলেন, আমার শহরের মানুষ লক্ষ টাকা দিয়ে প্রতিমা কিনে আনেন অন্য এলাকা থেকে। আর আমরা স্থানীয় কারিগররা খালি হাতে বসে থাকি। গুটি কয়েক যারা আসেন তারাও বেশি পারিশ্রমিক দিতে চান না। তারপর ও চাহিদা অনুযায়ী মূর্তি তৈরি করে দেই কারণ এ কাজ ছাড়া ও অন্য কাজ জানি না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত