নিজস্ব প্রতিবেদক

০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ১৫:০৮

জনবল সংকটে শিক্ষা কার্যক্রমে অচলাবস্থা সিলেট আই এইচ টির

সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকায় অবস্থিত ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আই এইচ টি) তে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল সংকটের কারণে সুষ্ঠু শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় চরম অচলাবস্থা বিরাজ করছে।

দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অপর্যাপ্ত জনবল সংকট রয়েছে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখলেও বর্তমানে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য ও সফলতা অর্জন করতে পারছে না। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

জানা গেছে, সিলেটের ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি ২০১১ সালের ২৪ ডিসেম্বর শুভ উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। এরপর প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যাপক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। পাওয়া যায় অনেক সাফল্য। পযায় ক্রমে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় শিক্ষক,কর্মকর্তা-কর্মচারী সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী সংকট সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠানটিকে পঙ্গু করে দেয়।  সামনের দিকে এগিয়ে যেতে বাঁধা হয়ে দাড়ায়। শিক্ষা কার্যক্রমে নেমে আসে স্থবিরতা।

সিলেটের ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে সিলেট বিভাগের সকল বেসরকারি ম্যাটস আই এইচ টি (ভোকেশনাল) - এর সকল রকম পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে বর্তমানে ৫ টি অনুষদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। সেগুলি হলো, ল্যাবরেটরি, রেডিওলোজী এন্ড ইমেজিং, ফিজিও থেরাপি, ডেন্টিস্ট্রি ও ফার্মেসী। চালু হওয়ার জন্য প্রক্রিয়াধীন অনুষদ হলো, স্পেশালাইজ ডিপ্লোমা কমিউনিটি হেলথ কোর্স। প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮২২ জন।

২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষে ভতি প্রক্রিয়াধীন শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৫৭ জন। চালু থাকা গুরুত্বপূর্ণ ৫ টি অনুষদে মাত্র ৬ জন শিক্ষক দিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। অতিথি শিক্ষক আছেন মাত্র কয়েকজন। এভাবে স্বল্প শিক্ষক দিয়ে ঢিলেঢালা ভাবে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। ফলশ্রুতিতে সঠিক পাঠদান করানো দুরূহ কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়াও ১২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ৮ জন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা যায়, সুষ্ঠু ভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হলে দরকার নুন্যতম ৪৭ জন শিক্ষক ও জন ১২০ কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রয়োজন। তাছাড়া  ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসন সংকটও রয়েছে। আবাসন সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের দুঃসহ দুর্দশায় পড়তে হয় সব সময়। প্রতিষ্ঠানটির সীমানা প্রাচীরও নেই। সীমানা প্রাচীর না থাকায় প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণ অরক্ষিত রয়েছে। সেখানে বহিরাগতরা অনুপ্রবেশ করে অপরাধমূলক অপতৎপরতা চালায়। সর্বোপরি প্রতিষ্ঠানটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

এসব সমস্যা সম্পর্কে সিলেটের ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির অধ্যক্ষ ডাঃ মোঃ নাছির উদ্দিন ভুইঞা বলেন-অনেক দিন ধরেই আমরা জনবল সংকটে রয়েছি। জনবল সংকট আমাদেরকে অনেক পিছিয়ে দিয়েছে। আমরা সঠিক ভাবে কাজ করতে পারছি না। আমরা আশা করব বর্তমান সরকার আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের দিকে নজর দিবেন। প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচিয়ে শিক্ষার আলো ছড়াবেন । আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি সমস্যা সমাধানের জন্য।

সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ মোঃ ইসমাইল ফারুক জানান, শিগ্রই পর্যায়ক্রমে সব সমস্যার সমাধান করা হবে। প্রায় ৪০ শতাংশ শূন্য পদ পূরণ করার কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ছাড়পত্র পেলেই শূন্য পদ দ্রুত পূরণ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত