নিজস্ব প্রতিবেদক

৩০ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:১৫

নগরীর ফুটপাত দখল মামলায় আরো ৫ জন কারাগারে

সিলেট নগরীর ফুটপাত দখল ও দখলদারের আশ্রয় প্রদানের দায়ে অভিযুক্ত আরো ৫ জনকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত।

তারা হচ্ছেন- ফরিদপুর জেলার মধুখালি থানার এলাইছার গ্রামের মৃত ইমাম উদ্দিন মোল্লার ছেলে সিলেট মহানগর হকার্স কল্যাণ সমবায় সমিতির সহ-সভাপতি আতিয়ার রহমান, দক্ষিণ সুরমা সিলাম টিল্লাপাড়ার মৃত আখফু মিয়ার ছেলে শফিক আহমদ, কুমিল্লা জেলার ব্রাক্ষনপাড়া থানার সিদলাই গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে আবুল বাশার, জকিগঞ্জ থানার বীরশ্রী বালিগ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল আহাদ ও শাহপরান থানার খাদিমনগর ইউনিয়নের দলইপাড়ার মৃত আব্দুল হালিমের ছেলে ও মহানগর হকার্স কল্যাণ সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: খোকন ইসলাম।

বুধবার দুপুরে সিলেটের মুখ্য মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো: সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে হাজির হয়ে এই ৫ আসামী জামিন আবেদন করলে আদালত তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী আইয়ুব আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।


এ নিয়ে আলোচিত এই মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভূক্ত ২৬ আসামীর মধ্যে ৯ আসামীকে কারাগারে প্রেরণ করা হলো। বাকী ১৭ জন পলাতক রয়েছেন।

এর আগে কারাগারে আটক থাকা রকিব আলী, রুমন আহমদ, রুহুল আমিন রুবেল ও মখলিছুর রহমান আইনজীবীর মাধ্যমে ওই আদালতে জামিনের আবেদন করলে আদালতের বিচারক মো: সাইফুজ্জামান হিরো তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন এবং কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেনকে আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে ১৭ গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভূক্ত পলাতক আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে ওয়ারেন্ট তামিলের প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

এই আদালতের এপিপি এডভোকেট মাহফুজুর রহমান জানান, আদালতের নির্দেশে ১৬ অক্টোবর সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও কোতোয়ালি থানার ওসি গৌছুল হোসেন ফুটপাত দখলকারীদের আশ্রয়দাতা হিসেবে ৩৮ জনের তালিকা আদালতে জমা দেন। সেই তালিকা অসম্পূর্ণ হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ তালিকা দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। এই তালিকার জমা দেওয়ার পর আদালত ২৬ জনের বিরুদ্ধে ১৪০৬/২০১৭ নং সিআর মামলা নথিভুক্ত করেন। এরপর এদের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন।

উল্লেখ্য, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ মে ফুটপাত দখলকারীদের তালিকা প্রস্তুত করে প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে সিলেট সিটি মেয়রকে নির্দেশ দেন মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত। এ ক্ষেত্রে মেয়রকে সহযোগিতার জন্য কোতোয়ালি থানার ওসিকেও নির্দেশ দেন আদালত।

এ নির্দেশের প্রেক্ষিতে গত ৩০ মে নগরীর ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে সিসিক। এ বৈঠকের পর গত ১ জুন থেকে নগরীর বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার ও চৌহাট্টা এলাকায় ফুটপাতে অবৈধ দখলকারীদের উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে সিসিক। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই সে অভিযানে ভাটা পড়লে অবৈধ দখলদাররা ফিরে আসে।

এদিকে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও ফুটপাত দখলকারী ও তাদের মদদদাতাদের তালিকা সংবলিত প্রতিবেদন জমা দিতে গড়িমসি করে সিসিক। গত ৮ জুন মেয়র প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় চেয়ে আদালতে আবেদন করলে তাকে এক মাসের সময় দেওয়া হয়। এর পর আরও তিন মাস অতিবাহিত হলেও মেয়র প্রতিবেদন দাখিল করেননি।

একটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনপ্রতিনিধি হয়েও কেন আদালতের আদেশ মেনে প্রতিবেদন দাখিল করছেন না, তার ব্যাখ্যা দিতে গত ৭ অক্টোবর তাকে আদালতে তলব করা হয়। এতে ১৬ অক্টোবর আদালতে স্বশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেন সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরো। এই নির্দেশের পর তালিকা নিয়ে আদালতে হাজির হন মেয়র।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত