জামালগঞ্জ প্রতিনিধি

০২ ডিসেম্বর, ২০১৭ ২৩:৫৯

জলমহালে অবৈধ ইজারাদারের একাধিক ঘের, পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের হালির হাওরের পানি নামার একমাত্র রাস্তায় ছাতিধরা জলমহালের অবৈধ ইজারাদারের একাধিক ঘেরের কারণে হাওরের পানিতে নদীতে নামতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে।
 
এই ঘটনায় শুক্রবার সকাল ১০টায় সরেজমিনে জামালগঞ্জের হালির হাওরের জলাবদ্ধতা ও রাতলার স্লুইস গেইট পরিদর্শন করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আল ইমরান।

জামালগঞ্জের শস্য ভাণ্ডার খ্যাত হালির হাওরের সাড়ে ১০ হাজার হেক্টর জমির অধিকাংশই এখনো পানির নিচে। হালির হাওরের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র রাস্তা বৈলাই নদীর মুখ রাতলার স্লুইস গেইট। দীর্ঘদিন স্লুইস গেইটের সামনের ও পিছনের তিনটি জায়গায় ছাতিধরা জলমহালের অবৈধ ইজারাদার বাঁশ, কাট দিয়ে খালের মধ্যে ঘের সৃষ্টি ও জাল ফেলে রাখার ফলে হাওরের পানি নদীতে যেতে পারছেনা।

বিশাল হাওরের পানি তুলনামূলক ভাবে কম নিষ্কাশনের ফলে বোরো ফসল রোপণের মৌসুমে ব্যাপক ভাবে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এই নিয়ে হালির হাওর পাড়ের জামালগঞ্জ সদর, নবগঠিত উত্তর ইউনিয়ন সহ বেহেলী ইউনিয়নের কৃষকদের দাবি জলাবদ্ধতা দূরীকরণের।

জলাবদ্ধতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে হাওর সংগঠনের নেতারা দাবি জানিয়ে আসছেন। আর এই নিয়ে স্থানীয় কৃষকরা উপজেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে বিগত এক মাস ধরে অবহিত করে আসছেন। এরই ফলশ্রুতিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী ও উপকারভোগী কৃষকদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাওরের পানি নিষ্কাসনের স্বার্থে মাছ আহরণকারীদের ম্যানেজার আলম মিয়াকে কৃত্রিম ঘের তুলে ফেলতে বলেন। ঘের তোলার অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করে অবৈধ ইজারাদারের লাঠিয়াল লক্ষীপুর গ্রামের সদর আলী, উমির আলী, জুলহাস ও ভুট্রো মিয়া ও তার লোকেরা ঘের তুলবে না বলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ও প্রশাসন, কৃষক ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে অশালীন আচরণ করেন।

এসময় জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রজব আলী, ইউপি সদস্য আ: কাদির,হালির হাওরের কৃষক প্রতিনিধি মতলিব মিয়া, আশরাফুল আলম, আবু হানিফা, আফজাল হোসেন, নুরুল আমিন, আ:আলী, জামিল উদ্দিন, আ: কাইয়ুম, ফখর উদ্দিন, ইয়াছিন মিয়া, মুজিবুর রহমান, ইমাম হোসেন প্রমুখ।  

এবিষয়ে অভিযুক্ত  সদর আলী বলেন, আমরা বিল পাইছিনা,খাজনা দিছি না, আমরা মামলা করছি, বিল পাইমু, আমরা সবসময় ঘের দিছি, দিমু, কারো কথায় ঘের তুলতাম না।

জলমহালের দায়িত্বরত ম্যানেজার আলম মিয়ার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে।

হাওর সংগঠক মতলিব মিয়া বলেন, এমন ধরনের কাণ্ড এ যুগে করতে পারে আপনারা না দেখলে বুজবেন না। আইন মানে না, প্রশাসন মানে না, তাদের বিচার চাই আমরা।

জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রজব আলী বলেন, আমি একাধিকবার গিয়ে তাদেরকে বলেছি ঘের ও জাল গুলি তুলে ফেলতে তারা কোন কথা শুনেনা,আজ ইউ,এনও সাব বলার পরও তারা কর্ণপাত করেনি,উল্টো বাজে আচরণ করেছে। কৃষকদের স্বার্থে আমরা এলাকাবাসী এ ব্যাপারে কঠোর হতেও আর পিছাবো না।
 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শামীম আল ইমরান বলেন, হালির হাওরের জলাবদ্ধতা নিয়ে কৃষকদের দাবীর কারণে আজ সরেজমিন পরিদর্শন করি। ছাতিধরা জলমহাল ইজারা হয়নি, নদীতে পানি নামার রাস্তায় ঘের দিয়ে  পানি নামতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় তা সরাতে বলেছি, তারা কর্ণপাত করেনি, হাওরের পানি নামতে প্রতিবন্ধকতার কারণে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত