নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ মে, ২০১৮ ২০:৪৩

বিচার বিলম্বিতের মাধ্যমে খুনিদের আড়ালের চেষ্টা চলছে

অনন্ত বিজয় হত্যার তিন বছর পূর্তিতে সিলেটে আলোক সমাবেশ

বিজ্ঞান লেখক অনন্ত বিজয় দাশ হত্যার বিচার কাজ তিনবছরেও শুরু না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সিলেট গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠকরা। একই সঙ্গে এই হত্যাকান্ডের বিচার দ্রুত সম্পন্নের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

শনিবার (১২ মে) অনন্ত বিজয় দাশ হত্যাকান্ডের ৩ বছর পূর্তিতে আয়োজিত আলোক সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। সন্ধ্যায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনাওে এ আলোক সমাবেশের আয়োজন করে সিলেট গণজাগরণ মঞ্চ। সমাবেশ শেষে অনন্ত বিজয়ের প্রতিকৃতির সামনে আলোক প্রজ্জ্বলন করা হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ৩ বছর আগে প্রকাশ্যে অনন্তকে হত্যা করা হলেও আজ পর্যন্ত তাঁর খুনিদের চিহ্নিত করা যায়নি। এতেই বুঝা যায় এই হত্যাকান্ডের বিচারে সরকারের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। বিচার প্রলম্বিত করার মাধ্যমে প্রকারান্তে খুনিদেরই আড়াল করার চেষ্টা চলছে।

বক্তারা বলেন, অনন্তসহ মুক্তমনা লেখক, বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের খোঁজে বের করে বিচারের সম্মুখিন করা না গেলে এ দেশকে জঙ্গিবাদ মুক্ত করা যাবে না। তাই দেশকে জঙ্গিবাদ মুক্ত করার জন্যও অনন্ত’র খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

সিলেট গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র দেবাশীষ দেবু’র সঞ্চালনায় আলোক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অনন্ত বিজয়ের ভগ্নিপতি, কর আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সমর বিজয় শী শেখর, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন-ইমজা’র সভাপতি আশরাফুল কবীর, বাসদ-সিলেট’র সমন্বয়ক আবু জাফর, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত, নারীনেত্রী ইন্দ্রানী সেন সম্পা, নাট্যকর্মী উজ্জ্বল চক্রবর্তী ও ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নাবিল এইচ চৌধুরী।

এতে অংশ নেন- জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা অসিতবরণ দাশ, কবি আবিদ ফায়সাল, কবি প্রণবকান্তি দেব, সাংবাদিক মঈনউদ্দিন মনজু, বাউল বশিরউদ্দিন, চিত্রশিল্পী সত্যজিৎ চক্রবর্তী, সংস্কৃতি কর্মী রিপন চৌধুরী, নজিকুল ইসলাম রানা, নিরঞ্জন সরকার অপু, অরূপ বাউল, উত্তরা সেন পম্পা, দেবপ্রিয়া পাল, আবু বকর আল আমিন, উইমেন ওয়ার্ডস সম্পাদক অদিতি দাস, প্রকাশক রাজীব চৌধুরী, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক রাজীব রাসেল, দেবোজ্যাতি দেবু, রেদোয়ান আহমদ, জামিউল জামি, শুভন ধর, অপু মজুমদার, বিপ্লব বণিক, সত্যজিত দাশ প্রমুখ।

 এরআগে সকালে সুবিদবাজারে অনন্ত বিজয়কে হত্যার স্থানে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিভিন্ন সংগঠন।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরীর সুবিদবাজারে নিজ বাসার সামনে খুন হন অনন্ত। বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি তিনি যুক্তি নামে বিজ্ঞান বিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের একদিন পর অনন্তের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।

মামলাটি প্রথমে তদন্ত করলেও পরে তা অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করা হয়।

তবে তিন বছরেও চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার বিচার কাজ শুরুই হয়নি। এখন পর্যন্ত অভিযোগ গঠনই করা হয়নি। আগামী সোমবার অনন্ত হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত