নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ জুলাই, ২০১৮ ১৭:২৭

একসাথে কাজ করার আশ্বাস আরিফ-কামরানের

ফলাফল যাই হোক সিলেটের উন্নয়নে একসাথে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছেন আরিফুল হক চৌধুরী ও বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। রোববার দুপুরে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এই আশ্বাস দেন সিলেট সিটি নির্বাচনের এই দুই মেয়র প্রার্থী।

শান্তি জিতলে জিতবে দেশ শ্লোগানকে সামনে রেখে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশল, ইউএসএআইডি ও ইউকে এইড এর যৌথ উদ্যোগে রোববার দুপুরে নগরীর একটি হোটেলের হলরুমে ‘সংলাপে নাগরিক অগ্রাধিকার’ শীর্ষক সংলাপের আয়োজন করা হয়।

সংলাপে প্যানেল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপদপ্রার্থী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান এবং বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী ও দলের কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী।

অনুষ্ঠানের শুরুর দিকে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নাগরিক অগ্রাধিকার বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে নগরীর বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার সুধীজনরা কয়েকটি টিমে বিভক্ত হয়ে অংশ নেন। কর্মশালা থেকে নগর উন্নয়নে প্রাপ্ত বিভিন্ন পরামর্শ ও পরিকল্পনা তুলে ধরা হয় দুই মেয়রপ্রার্থীর সামনে। পরে তারা এগুলোর উপর আলোকপাত করে বক্তব্য রাখেন। নগরকে সাজানোর ব্যাপারে তুলে ধরেন নিজেদের পরিকল্পনাও।

আরিফুল হক চৌধুরী বলেন- ‘আমি আমার বিগত দায়িত্বকালে ৫ বছরের মধ্যে প্রায় তিনবছরই ছিলাম সরকারের হেফাজতে। সেকারণে আমি নগরবাসীর উন্নয়নে কাজ করতে পারিনি। মাত্র ২ বছরে যতোটুকু কাজ করেছি সেগুলো সবাই জানেন। নগরীর অন্যতম সমস্যা হচ্ছে জলাবদ্ধতা সমস্যা। সেটি নিরসনে আমি নিরন্তর কাজ করেছি। যার সুফল নগরবাসী পাচ্ছেন। নগরবাসীকে উন্নত সেবা প্রদানের জন্য আমরা সিটি কর্পোরেশনকে ডিজিটালাইজড করেছি। এখন নগরবাসী ঘরে বসেই সিটি কর্পোরেশনের অনেক সেবা নিতে পারছেন।’

আরিফুল হক চৌধুরী আরোও বলেন- ‘নগরীর সৌন্দর্যবর্ধনে অনেক কাজ করা হয়েছে। ধোপাদিঘী পাড়ে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে। যার মাধ্যমে নগরবাসী পাবেন নির্মল নিঃশ্বাস গ্রহণের স্থান। যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ফুটপাত অবৈধদখলমুক্ত করার লক্ষ্যে আমি আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছি। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির কারণে হকাররা রাজপথ ছাড়ছেন। তারা আদালতের নিষেধও মানছেনা। ইনশাআল্লাহ আমি আগামীতে সুযোগ পেলে কোন অপশক্তির কাছে মাথানত করবো না। এই সিলেট নগরীকে সত্যিকারের একটি সৌন্দর্যমন্ডিত নগর হিসেবে গড়ে তুলবো।’

বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন- ‘নগরীর অন্যতম সমস্যা মাদকসমস্যা। এটির নিরসনে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি ও নাগরিকদের নিয়ে ৩০ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো যুদ্ধ করবো। ইনশাআল্লাহ এই পূণ্যভূমি মাদকমুক্ত হবে। নগরীর যানজট সমস্যার জন্য হকাররা একা দায়ী নয়। এদের সাথে যানবাহনগুলোও দায়ী। যানজট নিরসনে নগরীর ব্যস্ততম স্থানে একাধিক বহুতল পার্কিং জোন নির্মাণ করবো। নগরীর বেকার যুবসমাজকে কাজে লাগাতে তাদের জন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো।’

বদরউদ্দিন আহমদ কামরান নগরীর জলাবদ্ধতা নিয়ে বলেন- ‘আমার ভাই সদ্য সাবেক মেয়র বলেছেন নগরী জলাবদ্ধতামুক্ত হয়েছে কিন্তু সেটি বাস্তবে কতোটা হয়েছে সেটি নগরবাসী দেখতে পেয়েছেন কিছুদিন আগে। তার সময়ে নগরীর ছড়া-খাল উদ্ধারে ২শ’ কোটি টাকারও বেশি সরকারী বরাদ্দ পেয়েছেন। কিন্তু আমার সময়ে আমি মাত্র ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়ে কাজ করেছি। ৯টি ছড়াকে অবৈধদখলমুক্ত করেছি। এই নগরীর ছড়াগুলো দিয়ে অতীতে ছোট ছোট নৌকা চলাচল করেছে। কিন্তু এসব বিষয় এখন অলিক কল্পনা বলা চলে। আমি চাই সেদিন আবার ফিরে আসুক। নগরীর ছড়াগুলো সত্যিকার অর্থে দখলমুক্ত হোক। আমি সুযোগ পেলে সেটি করবো। নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সুরমানদী খনন করা প্রয়োজন। আমি সুরমানদীকে খনন করে এটিকে টেমসের মতো করে গড়ে তুলতে চাই।’

সংলাপের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক (কার্যক্রম) আমিনুল এহসান। উক্ত অনুষ্ঠানে সিলেটের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সুধীসমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

দুই মেয়র প্রার্থীই আগামী দিনগুলোতে সম্মিলিত ভাবে নগরকে সাজানোর লক্ষ্যে কাজ করার প্রত্যয়ও প্রকাশ করেন তখন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত