সিলেটটুডে ডেস্ক

৩০ আগস্ট, ২০১৮ ২২:০৮

অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি

অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ।

বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সন্দ্বীপ কুমার সিংহের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে নেতৃবৃন্দ এই স্মারকলিপি প্রদান করেন।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, এদেশের ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী ভূমির অধিকার সুনিশ্চিতকরণে শত্রু (অর্পিত) সম্পত্তি আইন বিলোপ করে ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন’ পার্লামেন্টে গৃহীত হলেও তদপরবর্তীতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তা অকার্যকর করে রাখে। ২০১১ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে আরো ৪টি সংশোধনী ২০০১ সালের মূল আইনে এনে অধিকতর ইতিবাচক করা হয়।

২০১১ সালের সংশোধনী আইনে আমলাতান্ত্রিক চক্রান্তে ‘খ’ তফসিল সংযুক্ত করা হয়, যা ছিল সম্পূর্ণভাবে আইনবিরোধী। ২০১৩ সালের ৪৬নং আইন গত ১০ অক্টোবর ২০১৩ইং তারিখে গেজেট আকারে প্রকাশের পর বিভিন্ন পর্যায়ে আরো তিনবার আইনের কথিত সংশোধনী গণবিরোধী আমলাচক্র কর্তৃক খসড়া মন্ত্রীসভায় অনুমোদনের জন্যে উত্থাপিত হয়। যা আপনি কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। ২০১৩ পরবর্তী এ সুদীর্ঘ সময়ে ‘খ’ তফসিলভূক্ত জমির খাজনা পরিশোধে নামজারীর ক্ষেত্রে ভূমি রাজস্ব কর্মকর্তারা ভুক্তভোগীদের অব্যাহতভাবে হয়রানি করে চলেছে।

আবার অন্যদিকে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের বিধানুযায়ী ‘ক’ তফসিলভুক্ত সম্পত্তি প্রত্যর্পণের আবেদন সরকারি হিসাবনুযায়ী ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৬২ হাজার। এর মধ্যে গত ৫ বছরে নিষ্পত্তি হয়েছে আনুমানিক ১০ হাজার মাত্র। মূল আইন প্রণয়নের সুদীর্ঘ ১৭ বছর অতিক্রান্ত হলেও কোন ভুক্তভোগীর বরাবরে অর্পিত সম্পত্তি নিষ্পত্তির অদ্যাবধি প্রত্যর্পিত হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই বরং যা আছে তা হল অবর্ণনীয় হয়রানি।

গত ৩ এপ্রিল ২০১৮ইং তারিখে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জারীকৃত এক পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, ২০০১-এ ২২ (৩) ধারার বিধান বিদ্যমান থাকাবস্থায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন স্মারকে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনাল ও আপীল ট্রাইব্যুনালের রায় বাস্তবায়নের উপযুক্ত নির্দেশনা থাকার পরও জেলা প্রশাসকগণ প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগে রিট দায়েরের জন্যে আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগে প্রস্তাব প্রেরণ করেছে। এ পরিপত্র জারীর ২২ দিনের মাথায় মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের উপ-সচিব, ড. ফারুক আহমেদ স্বাক্ষরিত এক পত্র প্রেরিত হয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে, যার অনুলিপি দেয়া হয়েছে আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের কাছে।

এতে বলা হয়েছে, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইতোপূর্বে প্রদত্ত পরিপত্রের বিষয়টির আইনী দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে। এ স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে আমরা ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এহেন আমলাতান্ত্রিক চক্রান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং একই সাথে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের দ্রুত বাস্তবায়নে অতীতের মতো এবারও আমরা আপনার আন্তরিক হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট জেলা শাখার সভাপতি বিরাজ মাধব চক্রবর্তী মানষ, সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি এডভোকেট মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা, সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট প্রদীপ কুমার ভট্টাচার্য, সিলেট মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দেব।  

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেট জেলা শাখার সহ-সভাপতি গোপিকা শ্যাম পুরকায়স্থ, পূজা উদযাপন সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি সুব্রত দেব, পূজা উদযাপন সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এড. রঞ্জন ঘোষ, পূজা উদযাপন মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রজত গুপ্ত প্রমুখ।    

আপনার মন্তব্য

আলোচিত