সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

০৯ এপ্রিল, ২০১৯ ২২:৪৩

পুরস্কারের হরিণ নিয়ে গেলো বনবিভাগ, ফুটবল টুর্নামেন্ট পণ্ড

একটি মায়া হরিণকে প্রথম পুরস্কার ঘোষণা দিয়ে ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়েছিল দোয়ারাবাজারের নরসিংপুর ইউনিয়নের রহিমেরপুর মধ্যমাঠে। দ্বিতীয় পুরস্কার ঘোড়া, তৃতীয় পুরস্কার খাসি ও চতুর্থ পুরস্কার ছিল ভেড়া। আগামী ১৭ এপ্রিল এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল।

দলছুট মায়া হরিণকে পুরস্কার ঘোষণা দিয়ে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন আর করা হলো না রহিমেরপুর গ্রামবাসীর। বন বিভাগের বাগড়ায় ভেস্তে গেল এই ফুটবল টুর্নামেন্ট। সোমবার পুরষ্কারের হরিণটি নিয়ে গেছে বন বিভাগ।

টুর্নামেন্টের প্রচারের জন্য পোস্টার ছাপা হয়েছিল। পোস্টারে উল্লেখ করা হয়েছিল- টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করবেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান ইমদাদ রেজা চৌধুরী। টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ ফি ধরা হয়েছিল ২ হাজার ১০০ টাকা। টুর্নামেন্টের ফি জমা দেয়ার জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিল রহিমেরপুর পার্শ্ববর্তী মাছিরপুরের জননী এন্টারপ্রাইজ।

এলাকায় এই পোস্টার সাঁটানোর পর প্রশ্ন উঠে, এই মায়া হরিণ পাওয়া গেলো কীভাবে? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোমবার ফুটবল টুর্নামেন্টের পোস্টারের ছবি প্রকাশ হলে টনক নড়ে বন বিভাগের। খোঁজ নিয়ে সোমবার বিকালে দোয়ারাবাজারের বন কর্মকর্তা সালাউদ্দিন রহিমেরপুর গিয়ে মায়া হরিণ উদ্ধার করেন। গ্রামের শাহীদ আলীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় পুরস্কারের সেই মায়া হরিণ।

ফুটবল টুর্নামেন্টের পরিচালনা কমিটির সদস্য ও রহিমেরপুর গ্রামের বাসিন্দা ফয়েজ উদ্দিন বলেন, ‘এক মাস আগে দলছুট এই হরিণ সীমান্তের ওপার থেকে এপারে আসে। হরিণটি জবাই করতে বা কাউকে নিতে দেওয়া হয়নি, গ্রামের সবার মতামতে এটি দিয়ে টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছিল। সোমবার বিকেলে বন বিভাগের কর্মকর্তা সালাউদ্দিন এসে হরিণটি উদ্ধার করে নিয়ে গেছেন।'

দোয়ারাবাজারের বন বিভাগের কর্মকর্তা সালাউদ্দিন বলেন, ‘রহিমেরপুরের শহীদ আলীর বাড়ি থেকে পুরুষ মায়া হরিণটি সোমবার বিকালে উদ্ধার করা হয়। এটির বয়স তিন বছর। এটি লম্বায় ৩৫ ইঞ্চি এবং উচ্চতায় ১৮ ইঞ্চি। রাতেই হরিণটি সিলেটের খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করে দেওয়া হয়।’

এদিকে, আগামী ১৭ এপ্রিল দোয়ারাবাজারের রহিমেরপুরে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টটি স্থগিত হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির সদস্য ফয়েজ উদ্দিন।

সুনামগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান ইমদাদ রেজা চৌধুরী বলেন, ‘আমাকে এই টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করার আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। পুরস্কার দেবার কথা আমার নয়। টুর্নামেন্টে কী পুরস্কার দেওয়া হবে, সেটি আমি জিজ্ঞেসও করিনি, আমি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের অতিথি নই।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত