সিলেটটুডে ডেস্ক

১৫ জুন, ২০১৯ ১৭:৪৫

সিলেটে বাজেট প্রত্যাখ্যান করে এনডিএফ’র মিছিল ও সমাবেশ

জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ সিলেট জেলা কমিটি প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের স্বার্থ রক্ষাকারী জাতীয় ও জনস্বার্থ বিরোধী গতানুগতিক বাজেট’ আখ্যায়িত করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।

শুক্রবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় শহরের সুরমা মার্কেটস্থ সংগঠনের কার্যালয় হতে শুরু হয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গিয়ে সমাপ্ত হয়। পরে সেখানে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সিলেট জেলা এনডিএফ’র সহসভাপতি সুরুজ আলীর সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক রমজান আলী পটুর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন এনডিএফ সিলেট শহর পূর্বাঞ্চল কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়া, জাতীয় ছাত্রদল সিলেট শহর পূর্বাঞ্চল কমিটির আহবায়ক আব্দুস সালাম, সিলেট জেলা প্রেস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এ কে আজাদ সরকার, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সহসাধারণ সম্পাদক আনসার আলী, স’মিল শ্রমিক সংঘ সিলেট বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. রহুল আমিন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, জাতিসংঘের ‘টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য’ তথা ‘এসডিজি’কে সামনে রেখে দেশি-বিদেশি অবাধ বিনিয়োগের নামে প্রস্তাবিত বাজেট লগ্নিপুঁজি ও দালালপুঁজির স্বার্থরক্ষা করায় শোষণ-লুণ্ঠন আরো বেপরোয়া হবে। সমাজে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য আরো দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। সকল সরকারের আমলে প্রণীত বাজেটই জাতীয় ও জনস্বার্থ বিরোধী হওয়ায় শিল্প, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের মত গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো উপেক্ষিত হয়েছে। তথাকথিত উন্নয়নের লক্ষ্যে ভ্যাট, ট্যাক্স তথা পরোক্ষ করের জালে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণকে বেধে ফেলা হয়েছে। একই সাথে জনজীবনের সাথে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর উপর নতুন করে বাড়তি কর বসিয়ে শ্রমিক-কৃষক-জনগণের জীবনকে আরো দূর্বিসহ করা হয়। অন্যদিকে কালো টাকার মালিকদের উৎসাহিত করতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের জন্য নানারকম প্রণোদনা জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

বক্তারা আরো বলেন, কৃষির জন্য অত্যাবশ্যকীয় সার, ডিজেল, কীটনাশকের মত বিষয়গুলোকে ভর্তুকি কমিয়ে কৃষিযন্ত্রের দামে ভর্তুকি দিয়ে মূলত ধনী গোষ্ঠী ও জোতদারকে সহায়তা ও দলীয় লুটপাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু তাই নয় সাম্রাজ্যবাদী সংস্থা জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বাস্তবায়নের নামে লগ্নিপুঁজি ও পণ্যের সর্বোচ্চ মুনাফা ও সামগ্রিক স্বার্থে অবকাঠামোসহ সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া আছে। তাই বাজেটকে যে শিরোনামেই উপস্থাপন করা হোক না কেন এই বাজেট মূলত সাম্রাজ্যবাদ ও তার সংস্থা আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকের নীতি-নির্দেশের আলোকে প্রণীত। এইজন্য প্রতিটি বাজেটই গণবিরোধী, গতানুগতিক ও ধারাবাহিকতারই প্রতিফলন। তাই বাজেট যে সরকারের আমলেই পেশ হোক তাতে রাষ্ট্রের সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর স্বার্থে কোন ব্যাঘাত সৃষ্টি হয় না। যে কারণে বাজেটের আকার বাড়লে লুটেরা গোষ্ঠীর সম্পদের আকার বাড়ে আর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ক্রমেই সম্পদহীন হয়। প্রচলিত ব্যবস্থায় বাজেট নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আশাবাদী হওয়ার কোন সুযোগ নেই।

জাতীয় ও জনস্বার্থমুখী বাজেটের পূর্ব শর্ত হচ্ছে জাতীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সরকার ও সমাজ প্রতিষ্ঠা। নেতৃবৃন্দ সেই লক্ষ্যে সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা গ্রহণের আহবান জানান।


আপনার মন্তব্য

আলোচিত