কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

৩০ জুন, ২০১৯ ২১:০৩

কমলগঞ্জে ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের হয়রানি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে জুন ক্লোজিংয়ের নাম করে গ্রাহকদের কাছ থেকে ভুতুড়ে বিল আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপর। এতে করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকরা ক্রমশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন। ইতোমধ্যে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বিল করে নেয়া হচ্ছে অভিযোগ তোলে সংবাদকর্মীদের কাছে মুখ খুলতে শুরু করেছেন গ্রাহকরা।

এদিকে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন কমলগঞ্জ জোনালসহ বিভিন্ন এলাকায় জুন মাসের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ ও সিস্টেম লস ঘোচাতে এবং বিদ্যুৎ লাইনে মেইটেনেন্স কাজের নামে সাত, আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকা, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এরই মধ্যে মে ও জুন মাসে বিদ্যুৎ বিলের সাথে অনেক গ্রাহকদের দ্বিগুণ, তিনগুণ বিল আসারও অভিযোগ উঠেছে।

গ্রাহকদের অভিযোগে ও মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের আওতাধীন কমলগঞ্জ, কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলা একাংশের প্রায় ৯০ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে। তবে গত এক মাস যাবত ঘন মেইটেনেন্স কাজের জন্য সাত, আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিহীন থাকতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ আসার পর আবার চলে যায়। প্রচণ্ড গরমের সময়ে এভাবে ঘন ঘন লোডশেডিং এর কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। তাছাড়া মে ও জুন মাসে বিদ্যুৎ বিলের সাথে দ্বিগুণ, তিনগুণ বিল আসছে। মিটার রিডিং সঠিক থাকলেও এই সময়ে অস্বাভাবিক বিল গ্রাহকদের বিড়ম্বনায় ফেলে দিচ্ছে। অন্য সময়ের তুলনায় বিদ্যুৎ ব্যবহার কম হলেও বিল দ্বিগুণ দেখা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রাক্তন এক পরিচালক জানান, জুন মাস বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ে তারা সিস্টেম লস ঘোচাতে ইচ্ছেকৃতভাবে বিলে বেশি টাকা আদায় করে নেয়। তাছাড়া সিস্টেম লস ঘোচাতে ও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে ঘন ঘন লোডশেডিং করা হয়। এগুলোর কারণে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারাও অনেক সময় বাড়তি সুবিধাও পেয়ে থাকে।

ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে কমলগঞ্জের ভানুগাছ বাজারের ৭নং ওয়ার্ডের গ্রাহক সামাদ রহমান, পতনঊষার ইউনিয়নের নুরুল মোত্তাকিম. সরবান আলী,  শমশেরনগর বাজারের রমা দাস গুপ্ত প্রমুখ গ্রাহকরা জানান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে বিলি করা জুনের বেশিরভাগ হিসাবেই অতিরিক্ত বিল দেয়া হয়েছে। অনেক মিটার রিডার তাদের সরেজমিন মিটার প্রদর্শন না করেই আন্দাজের উপর রিডিং লিখে বিলে তুলে দেয়া হয়।

মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এলাকা পরিচালক ও সমিতি বোর্ডের সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন ‘ভুতুড়ে বিলের মৌখিক অভিযোগ অনেক গ্রাহকদের কাছ থেকে পাচ্ছি। আগামী জুলাই মাসে সমিতির বোর্ড মিটিংয়ে বিষয়টি উত্থাপন করে এর জবাব চাওয়া হবে।’

অভিযোগ বিষয়ে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মোবারক হোসেন সরকার বলেন, সম্প্রতি সময়ে বিদ্যুৎ লাইন ও ফিডারে বেশ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এগুলোর কাজ চলছে। দু’এক মাসের মধ্যে সমাধা হয়ে যাবে। তাছাড়া লোডশেডিং, সিস্টেম লস ঘোচানোর অভিযোগ সঠিক নয়। বিদ্যুৎ বিল বেশি আসার বিষয়টি মিটার রিডিং এর উপর নির্ভরশীল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত