মো. মিনহাজ উদ্দিন, গোয়াইনঘাট

১৪ আগস্ট, ২০১৯ ২২:২৭

ঈদের ছুটিতে গোয়াইনঘাটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড়

সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতি আকৃষ্ট সারাদেশের ভ্রমণ প্রেয়সী মানুষ। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে বছর জোড়ে পর্যটকদের উপস্থিতি থাকে চোখে পড়ার মত। ঈদ, পূজাসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় দিবসের ছুটিতে ভ্রমণ প্রেয়সী মানুষের পদচারণয় মুখর থাকে সিলেটের পিকনিক স্পটগুলো। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি।

ঈদুল আযহার টানা ছুটিতে পরিবার পরিজন, বন্ধু বান্ধব মিলে ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করতে যেন ঢল নেমেছিল সিলেটের জাফলং জিরোপয়েন্টে, জিরোপয়েন্ট ঘেঁষা ভারতীয় ঝুলন্ত ব্রিজ, ফাটাছড়া মায়াবী ঝর্ণা, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, পান্তুমাইসহ সিলেটের নয়নাভিরাম নান্দনিক পর্যটন স্পট সমূহে।

সোমবার ঈদুল আযহার দিন থেকে শুরু করে আজ বুধবার পর্যন্ত জাফলং, ফাটাছড়া মায়াবী ঝর্ণা, বিছনাকান্দি, রাতারগুল সোয়াম ফরেস্ট, পান্তুমাই সর্বত্রই পর্যটকদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। লোকে লোকারণ্য যেন পুরো পিকনিক স্পট এলাকা সমূহ। বাস, ট্রাক, মিনি বাসসহ ছোট যানবাহনে করে ভ্রমণ প্রেয়সী মানুষজন এখানে এসে ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন। সবুজ সতেজতায় নিজেকে আবৃত্ত করতে তাড়া ছুটে আসেন প্রকৃতির দোরগোড়ায়।

দিগন্ত জোড়া পাহাড়, ছোট বড় টিলা, পাহাড়ের গায়ে সবুজ লক্ষ লক্ষ গাছের সারী, পিয়াইনের বুক চিরে বয়ে চলা প্রবহমান পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ স্ফটিক জল, নুড়ি পাথর, চা বাগান, গহিন বন, হিজল করচের অরণ্য ঘেরা সবুজ বেষ্টনী, পাহাড়ের বুক চিরে নেমে আসা ঝর্ণা ধারায় গা ভিজিয়ে ছবি সেলফিতে নিজেদের আবদ্ধ করে আনন্দে ভাগাভাগি করছেন আগত পর্যটক দর্শনার্থীরা।

পর্যটক নিরাপত্তায় গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি ঠেকাতে সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন।

মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জাফলং জিরো পয়েন্টে কথা হয় ঢাকার পর্যটক দম্পতি সাইফুল ইসলাম এবং রহিমা বেগমের সাথে। জাফলং বেড়াতে এসে তারা প্রকৃতির লাবন্যতায় মুগ্ধ। তারা জানান, সরকারের পর্যটন ব্যবস্থাপনায় সময় উপযোগী কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে জাফলংকে আরও একটু আধুনিকায়ন এবং ঢেলে সাজালে এখান থেকে সরকার বছরে কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় করতে পারেন।

বুধবার সকাল ১০টায় হাদারপারে বিছনাকান্দি ভ্রমণ করে হুমায়ুন কবির,জাকির হোসাইন,সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া, বেলাল হোসেনসহ বন্ধু বান্ধবরা জানান, নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অপার সম্ভাবনাময় বিছনাকান্দি পর্যটন স্পট। এখানে ভ্রমণে আসলে যে কারোরই মন ভরে যাবে। তবে এখানকার যাতায়াত ব্যবস্থা আরও উন্নত হওয়া জরুরী।

গোয়াইনঘাটের দর্শনীয় স্থান সমূহে পর্যটক নিরাপত্তায় স্পটসমূহে প্রশাসনের একাধিক মেডিকেল টিম,ফায়ার সার্ভিস,তথ্য কেন্দ্র, গোয়াইনঘাট থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল আহাদের উপস্থিতে পুলিশ বিভাগের একাধিক টিমসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি এবং তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। সর্বোপরি গোয়াইনঘাটের পর্যটন স্পটসমূহে ঘুরতে আসা মানুষজনের ভ্রমণ আনন্দ ঘন এবং নিরাপদ প্রস্থানে প্রশাসন এবং পুলিশ বিভাগের অবস্থান ছিল প্রশংসনীয়।

গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিত কুমার পাল জানান, পর্যটকদের নিরাপদ আগমন,ভ্রমণ এবং নিরাপদ প্রস্থানে সবসময়ই প্রশাসন তৎপর রয়েছে। প্রশাসনের উদ্যোগে একাধিক মেডিকেল টিম, তথ্য কেন্দ্র সার্বিক বিষয়ে তদারকির ব্যবস্থা রয়েছে। গোয়াইনঘাট থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল আহাদ জানান, জাফলং,বিছনাকান্দি, রাতারগুলসহ সবকটি পর্যটন স্পটে পর্যটক দর্শনার্থীর আগমন নিরাপদ এবং তাদের নির্বিঘ্নে ভ্রমণ নিশ্চিত করণে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। পোশাকধারী এবং সাদা পোশাকের পুলিশের একাধিক টিম শান্তি শৃঙ্খলায় নিয়োজিত রয়েছে। মাদক, জুয়া, তিনকার্ড, অজ্ঞান পার্টি, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিরোধে থানা পুলিশ নিরাপত্তা জোরদার করেছে। পর্যটকদের সাথে অপরাধীর কোন ধরনের তৎপরতা বরদাশত করা হবে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত