সিকৃবি প্রতিনিধি

২৯ আগস্ট, ২০১৯ ২১:২৪

ইউজিসির অভিন্ন নীতিমালা প্রত্যাখ্যান সিকৃবির

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতি

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক প্রস্তাবিত অভিন্ন নীতিমালা প্রত্যাখ্যান করেছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিকাল ৩ টায় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে ইউজিসির অভিন্ন নীতিমালা প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি জানান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ।

অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নূর হোসেন মিঞা ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. জীতেন্দ্রনাথ অধিকারী গণমাধ্যম কর্মীদের মাঝে তাদের প্রতিবাদ তোলে ধরেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ও গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জীতেন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, “পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি সংক্রান্ত ইউজিসি কর্তৃক প্রস্তাবিত যে অভিন্ন নীতিমালা করা হয়েছে তা একপেশে, বিদ্বেষমূলক, বিভ্রান্তিকর ও অসঙ্গতিপূর্ণ। ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোন শিক্ষক প্রতিনিধি না রেখেই এ নীতিমালা করায় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এ নীতিমালা প্রত্যাখ্যান করেছে। এ নীতিমালাটি খসড়া থাকা অবস্থায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি কর্তৃক প্রত্যাখ্যান হওয়া স্বত্বেও কেন গায়ের জোরে চূড়ান্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক সমাজের উপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।”

তিনি আরও বলেন, “সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি মনে করে, এটি উচ্চশিক্ষাকে ধ্বংস করার জন্য একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। নীতিমালায় বর্ণিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মঘন্টা হিসেব করে মর্যাদা প্রদান একটি চূড়ান্ত অসম্মানজনক বিষয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো ও গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ও সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি না করে ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর সমন্বিত জার্নালে প্রকাশনা চাওয়া হাস্যকর ও অযৌক্তিক। সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অযৌক্তিক শর্তে বেড়াজালে বহুধা বিভক্তি নীতিমালাকে অভিন্ন নীতিমালা বলে চালিয়ে দিয়ে শিক্ষার মান উন্নয়নকে গলা টিপে হত্যা করার পরিকল্পনা বলে আমাদের সমিতি মনে করে। তাই অভিন্ন নীতিমালার নামে কালো নীতিমালা অবিলম্বে বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞ ও সর্বজন গ্রাহ্য শিক্ষকমন্ডলীর মধ্য থেকে একটি কমিটির মাধ্যমে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও ত্রুটিহীন নীতিমালা তৈরি পূর্বক বাস্তবায়নের জোর দাবী জানাচ্ছি। এ ধরণের অসঙ্গতিপূর্ণ নীতিমালা বাস্তবায়নের চেষ্টা হলে শিক্ষক সমিতি সম্মিলিতভাবে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিহত করবে।”

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. নূর হোসেন মিঞা তার বক্তব্যে বলেন, “প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভিন্ন ভিন্ন আইন দ্বারা গঠিত বিধায় অভিন্ন নীতিমালা তখনই করা সম্ভব হবে যখন সকল বিশ্ববিদ্যালয় একই আইনের আওতায় আসবে, যেমন- ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশ। শিক্ষকসমাজ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র পে স্কেল বহুদিন ধরে দাবী করে আসছে। কিন্তু সে বিষয়ে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে অভিন্ন নীতিমালার নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র দ্বারা দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে আমরা মনে করি। এমতাবস্থায়, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার মান উন্নয়ন সমুন্নত রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় আর্থিক বরাদ্দ ও মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

তাদের দাবী মেনে নেয়া না হলে আগামীতে দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আরও কঠোরতম আন্দোলনে যাবেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দরা হুঁশিয়ারি দেন ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত