বিশ্বনাথ প্রতিনিধি

২৬ অক্টোবর, ২০১৯ ০১:১৩

বিশ্বনাথে পপিকে গণধর্ষণের কথা স্বীকার করলেন জাহাঙ্গীর ও বারিক

সিলেটের বিশ্বনাথে পপি নামের এক তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনার রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই মামলার প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) ও দ্বিতীয় আসামি বারিক মিয়া (৩৭) গণধর্ষণের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। দীর্ঘ ৮দিন রিমান্ডে থাকার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেটের জ্যুডিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মো: মাহবুবুর রহমান ভূঁঈয়ার কাছে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে গণধর্ষণের দায় স্বীকার করে তারা।

এর আগে গত ১৮ অক্টোবর শুক্রবার সিলেটের জ্যুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক বেগম নওরিন করিম পৃথকভাবে এ দুজনের ৮দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ধর্ষক জাহাঙ্গীর পপির বোনজামাই ফয়জুল ইসলামের পাশের বাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তেতলী চেরাগী গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে।

দায় স্বীকারকারী বারিক মিয়াও একই গ্রামের আব্দুল মনাফের ছেলে। আর গণধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহননকারী ২১ বছর বয়সী পপি বেগম সিলেটের বিশ্বনাথের লালটেক গ্রামের দরিদ্র শুকুর আলী ও জ্যোৎস্না বেগম দম্পতির তৃতীয় মেয়ে।

আদালতে জবানবন্দি প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তি। তিনি বলেন, গত ৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টার দিকে বোন ও বোনজামাইর সঙ্গে অভিমান করে নিজ বাড়ি যেতে বের হন পপি। রাত পৌনে ১২টারদিকে বোনের বাড়ির পথ থেকে তুলে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে জাহাঙ্গীর আলম ও বারিক মিয়া। পরে ১০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টারদিকে পপিকে তার বোনের বাড়ি রেখে যান জাহাঙ্গীর।

এসময় বোনের গালমন্দ সহ্য করতে না পেরে বোনজামাইকে সঙ্গে নিয়ে ওইদিন সকালে বাড়ি ফিরে একটি চিরকুটে বিস্তারিত লিখে দুপুরে আত্মহত্যা করেন পপি। ওইদিন বিকেল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দায়সারাভাবে কাজ করেন বিশ্বনাথ থানা পুলিশের এসআই অরুপ সাগর চৌধুরী। তিনি লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্যে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। আর ১১ অক্টোবর ময়না তদন্ত শেষে পপিকে দাফন করা হয়।

দাফনের চারদিন পর গত ১৩ অক্টোবর রোববার পপির আত্মহত্যার ঘরেই তার হাতব্যাগে চিরকুট পান তার মা জ্যোৎস্না বেগম। পরদিন ১৪ অক্টোবর সোমবার রাতে পপির বাবা শুকুর আলী বাদী হয়ে জামাতা ফয়জুল ইসলামসহ ৪জনকে আসামি করে বিশ্বনাথ থানায় গণধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচনা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ৫)। মামলার প্রেক্ষিতে একে একে ৩ আসামিকে র‌্যাব-৯ ও থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে আর বারিক মিয়া আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে আটকা পড়েন।

১০দিনের মাথায় ওই মামলার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে জানিয়ে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি (প্রশাসন) শামীম মুসা রহস্য উদঘাটনের সত্যতা জানিয়ে বলেন, পত্রিকার সংবাদ দেখেই তারা (পুলিশ) গণধর্ষণের বিষয়টি জানতে পারেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত