হৃদয় দাশ শুভ, শ্রীমঙ্গল

১২ নভেম্বর, ২০১৯ ১৭:০৭

ট্রেন দুর্ঘটনা: স্বামীর লাশ দাফন করে ফেরার পথে স্ত্রীর মৃত্যু

পাঁচ দিনের ব্যবধানে ভাই ও ভাবিকে হারিয়ে মুষড়ে পড়েছেন জ্যোৎস্না বেগম

চট্টগ্রামে একটি জাহাজে শ্রমিক হিসেবে কািজ করতেন মুসলিম মিয়া। পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকতেন। মূল বাড়ি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে। জাহাজে দুর্ঘটনায় গত ৭ নভেম্বর মারা যান মুসলিম মিয়া। গত শনিবার স্বমীর লাশ নিয়ে তিন সন্তানসহ শ্রীমঙ্গলের গ্রামের বাড়িতে আসেন মুসলিম মিয়ার স্ত্রী জাহেদা বেগম (৪০)।

গ্রামের বাড়িতে স্বামীর দাফন ও ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকবতা শেষে সোমবার রাতে চট্টগ্রাম ফিরে যাওয়ার জন্য উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠেছিলেন জাহেদা। তারা ট্রেনে চড়ার কিছুক্ষণ পরই ঘটে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারান জাহেদা বেগম (৪০)। গুরুতর আহত হয় জাহেদা বেগমের তিন সন্তান ইমন (১৫) ও সুমি (১০), মিম (২)। আহত হন ওই ট্রেনে থাকা জাহেদা বেগমের মা হাজেরা বেগম। তাদের ঢাকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
 
শ্রীমঙ্গলের আশিদ্রোন ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামে জাহেদার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, বিলাপ করছেন জাহেদা বেগমের আত্নীয় স্বজনরা৷ সকাল থেকে এলাকার লোকজন এসে ভিড় করছেন বাঁশ আর টিনের বেড়ার ভাঙ্গাচোরা বাড়িটিতে।

স্থানীয় বাসিন্দা টিটু মিয়া জানান, গত শনিবার আমরা জাহেদার স্বামী মুসলিম মিয়াকে দাফন করেছি। রোববার স্বামীর কুলখানি শেষ করে জাহেদা তার বাচ্চাদের বার্ষিক পরীক্ষা দেওয়ানোর জন্য চট্রগ্রাম নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেখানে যাওয়ার পথেই দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়৷

জাহেদা বেগমের ননদ জোৎস্না বেগম সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমককে বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনায় আমার ভাইকে হারিয়েছি। তার পাঁচদিনের মাথায় মরা ভাবীকেও হারিয়ে ফেললাম৷ আমার ভাইয়ের ছেলেমেয়েগুলো এখন এতিম হয়ে গেলো৷

রসঙ্গত, সোমবার ( ১১ নভেম্বর) ভোর পৌনে ৩টার দিকে ব্রাহ্মনবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর উদয়ন ও তূর্ণা নিশীথার মধ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ১৭ জন নিহত হন ও আহত হন অর্ধশতাধিক যাত্রী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত