হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

১৬ জানুয়ারি, ২০২০ ০১:৫৪

হবিগঞ্জে একটি মোবাইল ফোনের জন্য শিশুকে হত্যা করে প্রতিবেশি স্কুলছাত্র

২০ হাজার টাকা দামের মোবাইল ফোনের জন্য হবিগঞ্জের স্কুলছাত্র ইসমাইল হোসেন হৃদয় (১২) কে হত্যা করে প্রতিবেশি ১০ম শ্রেণির ছাত্র শাহরিয়ার হোসেন সাইমন (১৫)।

বুধবার সন্ধ্যায় প্রেস ব্রিফিয়ের মাধ্যমে এমনটি জানান হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা।

এর আগে বুধবার বিকেলে সাইমন হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে এই হত্যার কথা স্বীকার করে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় সাইমনকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আর সোমবার নদীর পাড় থেকে ইসমাইলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা জানান, সাইমন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। সে আদালতকে জানিয়েছে- হবিগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়ায় স্কুলছাত্র ইসমাইল হোসেন (১২) এর বাবা সৌদি আরব প্রবাসী ফারুক মিয়া ২ মাস পূর্বে ছেলের জন্য ২০/২২ হাজার টাকা মূল্যের একটি লেনোভা কোম্পানীর স্মার্টফোন প্রেরণ করেন। ইসমাইল সেটি দিয়ে ছবি ও ভিডিও তুলে সবাইকে দেখাত। মোবাইলটির প্রতি লোভ হয় ইসমাইলের পাশের বাড়ী কদর আলীর ছেলে ও হবিগঞ্জ শহরের জে কে এন্ড এইচ কে হাই স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্র সাইমনের।

পুলিশ সুপার বলেন, গত ১০ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাকে সাইমন শিশু ইসমাইলকে বলে তাকে দিয়ে সে একটি নাটক বানাবে। এই নাটক ফেসবুকে দিলে যদি ১০০ লাইক পায় তাহলে ইসমাইল ৫০ হাজার টাকা পাবে। ইসমাইল সরল বিশ্বাসে তাতে রাজী হয়। ১০ জানুয়ারী সাড়ে ৩টায় ইসমাইলকে হবিগঞ্জ শহরের ২নং পুল এলাকায় এসে একটি সিএনজি-অটোরিক্সাতে করে সদর উপজেলার বৈদ্যার বাজার এলাকায় যায় সাইমন। সেখান থেকে পায়ে হেটে খোয়াই নদীর পার হয়ে চরহামুয়া এলাকায় যায়। এর মাঝে সন্ধ্যা হয়ে আসলে খোয়াই নদীর চরে গিয়ে সাইমন নাটকের কথা বলে ইসমাইলের হাত-পা বেধে ফেলে। নাটক মনে করে ইসমাইল কোন বাঁধা দেয়নি। হাত পা বেঁধে মুগুর দিয়ে ইসমাইলের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে সাইমন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে লাশ নদীতে ফেলে সাইমন মোবাইল নিয়ে বাড়িতে চলে আসে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা জানান, হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি মাসুক আলীসহ কর্মকর্তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় দ্রুততম সময়ে আমরা চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছি। আপাতত মনে হচ্ছে সাইমন ছাড়া আর কেউ হত্যাকাণ্ডে জড়িত নেই। তবে তদন্তে আরও কেউ আছে কি না তা জানা যাবে।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাতে নিহত স্কুলছাত্রের চাচা টেনু মিয়া বাদি হয়ে অজ্ঞাত ৭/৮জনকে আসামী করে হবিগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত সোমবার দুপুর ১২ টায় স্থানীয় লোকজন তার লাশ দেখে সদর থানায় খবর দিলে ওসি মোঃ মাসুক আলীর নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাশের সুরতহাল তৈরি করে সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করে। ইসমাইলের পিতা ফারুক মিয়া সৌদি আরব থেকে দেশে আসার পর মঙ্গলবার বিকেলে তার লাশ দাফন করা হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত