সদরুল আমিন, ছাতক

১২ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ২২:৫৩

ছাতকে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ধীরগতি, শঙ্কিত চাষিরা

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দেওয়া সময়সীমা শেষ হতে চললেও সুনামগঞ্জের ছাতকের হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হবে কি না এনিয়েও ইতোমধ্যে শঙ্কিত হাওর পাড়ের চাষিরা। সময়মতো কাজ শেষ না হলে আগাম বৃষ্টিতে হাওরে ঢল নামলে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কাও তৈরি হয়েছে তাদের মধ্যে। তবে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের নাইন্দার হাওরের বোরো ফসল রক্ষা বাঁধ প্রকল্পে দুটি পিআইসির মাধ্যমে প্রায় ১৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর মধ্যে ১নং পিআইসি কচুদাইড় প্রকল্প এলাকার কাজ এ পর্যন্ত ২৫ ভাগও সম্পন্ন হয়নি। কিন্তু প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়ে গেছে বলে জানান, পিআইসি সভাপতি আব্দুর রশিদ ও ছাতক পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়ার্ক এসিষ্ট্যান্ড ফজলু মিয়া। এদিকে উপ-সহকারী প্রকৌশলী ভানুজয় দাস প্রকল্প এলাকায় একদিন গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন এ প্রকল্পের সেক্রেটারি আব্দুল হামিদ।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, এ প্রকল্পে বরাদ্দ রয়েছে ৬ লাখ ২৯ হাজার ৯শ ৮২ টাকা। এর মধ্যে রাস্তা ও মাটি ভরাট ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৪শ ৫৫ টাকা, বাঁশের কাজে ১লাখ ৮৩ হাজার ৬শ ৭৪ টাকা, লিড, কম্পেকশন ও ঘাস লাগানো কাজের বরাদ্দ ৬০ হাজার ৮শ ৪০ টাকা। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১৫-২০ ফুটের ছোট একটি ভাঙ্গা বন্ধ করা ও পুরানো রাস্তার একটি অংশে মাটি ভরাট করে কিছু বস্তা স্লোপে রাখা হয়েছে। এতে অল্প পরিমাণ বাঁশের ব্যবহারও করা হয়েছে। ৯৬ মিটার প্রকল্পের কোথাও ঘাস লাগাতে দেখা যায়নি। সবমিলিয়ে এ প্রকল্পের কাজ ২৫ ভাগও সম্পন্ন হয়নি।

স্থানীয় হোসেন মিয়া, দেলোয়ার, কালা মিয়াসহ একাধিক কৃষক জানান, প্রতি বছরই বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের নামে পিআইসির লোকজন পানি উন্নয়ন বোর্ডের লক্ষ-লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করছে। গত বছরের বিতর্কিত সভাপতিকে এ বছরও পিআইসির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এদিকে ২নং পিআইসি মির্জা খাল, চৌধুরী খাল ও সাহেব খাল ১ ও ২এর মুখের ভাঙ্গা অংশ বন্ধ ও মেরামত করণ কাজের বরাদ্দ ৮ লাখ ২৮ হাজার ৪শ ৪০ টাকা। এরমধ্যে রাস্তা ও মাটি ভরাট কাজে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৪শ ৯৪ টাকা, বাঁশের কাজে ১ লাখ ৪১ হাজার ২শ ৮৮ টাকা, লিড, কম্পেকশন ও ঘাস লাগানো কাজে বরাদ্দ ২ লাখ ৭ হাজার ৫শ ৮ টাকা। এ প্রকল্পে ৩টি খালের মুখ বন্ধ করা হয়েছে। মির্জা খালের মুখ ভরাট হয়েছে অর্ধেক অংশ। এ প্রকল্পের কোন খালেই বাঁধের উপর ঘাস লাগানো হয়নি। মির্জা খালের মুখে বাঁশ দিয়ে মাচা তৈরি করে রাখা হয়েছে।

সময়মতো বস্তায় মাটি ভর্তি করে খালে ফেলে দেয়া হবে বলে জানান, পিআইসির সভাপতি জসীম উদ্দিন তালুকদার। তিনি বলেন, কাজের মেয়াদ ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এর মধ্যে প্রকল্পের পুরো কাজই সম্পন্ন করা হবে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ২নং পিআইসির কাজ প্রায় ৫০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ছাতকের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ভানুজয় দাস দু’টি ফসল রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের বিষয়ে জানান, নিয়মিত ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে তদারকি করা হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ সমাপ্ত হবে। পিআইসিকে এখনো কাজের অনুপাতে টাকা দেয়া যাচ্ছেনা। ফলে কাজে কিছু বিলম্ব হচ্ছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত