শাকিলা ববি

২৫ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ০২:১৫

সিলেটে বিটিসিএলে আগ্রহ বাড়ছে গ্রাহকদের, বিনামূল্যের অফারে ব্যাপক সাড়া

প্রায় ৮ বছর যাবত ল্যান্ডফোন ব্যবহার অনাগ্রহী হয়ে উঠেছের সাধারণ মানুষ। মোবাইল ফোনের সহজলভ্যতা, গ্রাহকভোগান্তি, কারণে-অকারণে সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ নানা কারণে ল্যান্ডফোন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন সাধারণ মানুষ। যার ফলে অস্তিত্ব সংকটে থাকা বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লি. (বিটিসিএল)। তবে মুজিববর্ষ উপলক্ষে গত বছরের ২২ অক্টোবর ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বিনামূল্যে ল্যান্ডফোন সংযোগ ও পুনঃসংযোগের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই সিলেটে নতুন সংযোগ পেতে গ্রাহকদের বেশ সাড়া পাওয়া গেছে।

আগে যেখানে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১২টি সংযোগের আবেদন পড়ত সেখানে এখন আবেদন পড়ে শতাধিক। শুধু ল্যান্ডফোনে নয় জিপন (ইন্টারনেট), এডিএসএল (ইন্টারনেট ) সংযোগেও উল্লেখযোগ্য আবেদন পড়ছে বলে জানান বিটিসিএল'র সিলেট শাখার কর্মকর্তারা।

বিটিসিএল'র সিলেট কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জানুয়ারি মাসে সিলেটে পিএসটিএন (ল্যান্ডফোন) সংযোগ দেওয়া হয়েছে ১৬১টি। জিপন (ইন্টারনেট) সংযোগ দেওয়া হয়েছে ৫২টি। এডিএসএল (ইন্টারনেট) সংযোগ দেওয়া হয়েছে ৪৮টি। ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত পিএসটিএন (ল্যান্ডফোন) সংযোগ দেওয়া হয়েছে ৩৯টি। জিপন (ইন্টারনেট) সংযোগ দেওয়া হয়েছে ১৫টি। এডিএসএল (ইন্টারনেট) সংযোগ দেওয়া হয়েছে ১২টি। এছাড়া সিলেটের ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জিপন (ইন্টারনেট) সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এ মাসের বেশ কিছু আবেদন এখনও জমা রয়েছে। শিগ্রই সেগুলোর সংযোগ দেওয়া হবে।

বিটিসিএল সিলেট শাখা সূত্রে আরও জানা যায়, শুরুর দিকে সিলেটে মোট ৩৩ হাজার ল্যান্ডফোন সংযোগ ছিল। তবে ধীরে ধীরে তা কমে গত ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সংযোগের সংখ্যা দাঁড়ায় ৮ হাজার ৫৩৮টি। এর মধ্যে সিলেটের সরকারি দফতরগুলোতে রয়েছে ৫৫ ভাগ, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে রয়েছে ৩৫ ভাগ ও বাকি ১০ ভাগ রয়েছে বাসাবাড়িতে।

গত বছরের ২২ অক্টোবর ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বিনামূল্যে টেলিফোন সংযোগ দেওয়ার কথা জানান। তার বক্তব্যের পর অনুযায়ী ওই দিনই বিনামূল্যে ল্যান্ডফোন সংযোগ ও পুনঃসংযোগের ঘোষণা দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এর পর থেকেই সিলেট বিটিসিএলের সংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন। তাদের এই প্রচারে জানুয়ারি মাস থেকে আবেদনের পরিমাণ বাড়তে থাকে।

গ্রাহদের আকৃষ্ট করার জন্য বিটিসিএলে আনা হয়েছে নতুন নতুন সেবা। মাসিক ন্যূনতম কলরেট, বিল ও অভিযোগের জন্য অ্যাপ, কপার ক্যাবলের মাধ্যমে ইন্টারনেট ও টেলিফোন সেবা (এডিএসএল) ও জিপন অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে উচ্চ গতির ইন্টারনেট ও টেলিফোন সেবা। এছাড়াও ইন্টারনেটের ব্যাপক মূল্য হ্রাস করেছে বিটিসিএল।

এ ব্যাপারে বিটিসিএল সিলেটের উপ-মহাব্যবস্থাপক (টেলিকম) মো. আব্দুছ ছামাদ বলেন, বিটিসিএল গ্রাহকদের সেবা দিতে বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন সেবা চালু করা হয়েছে। উচ্চগতির ইন্টারনেটে ব্যাপক মূল্য হ্রাস করা হয়েছে। ল্যান্ডফোন টু ল্যান্ডফোন কল আনলিমিটেড মাসে ১৫০ টাকায় করা হয়েছে। ল্যান্ডফোন টু মোবাইল কল রেট রাখা হয়েছে মাত্র ৫২ পয়সায়। মাসিক কোনো লাইন রেন্টও নেই। মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিনামূল্যে ল্যান্ডফোন সংযোগ ও পুনঃসংযোগ দেওয়া হচ্ছে। মুজিববর্ষের এই অফার সিলেটের বাসিন্দারা কাজে লাগাচ্ছেন।

তিনি বলেন, বিনামূল্যে সংযোগের অফারটিতে আমরা ভালো সাড়া পেয়েছি। আমাদের কর্মীরা মাঠে অবিরাম কাজ করছে। সিলেটের মাটির নিচ দিয়ে যে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের কাজ চলছে, সেটা শেষ হলেই সিলেটের প্রতিটি ঘরে আবারো বিটিসিএল প্রবেশ করবে বলে মনে করেন বিটিসিএল সিলেটের উপ-মহাব্যবস্থাপক (টেলিকম) মো. আব্দুছ ছামাদ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত