সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

২৭ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ২০:৪০

অপরাধ না করেও মামলার আসামি সুনামগঞ্জের চার ব্যক্তি

একজন মানুষ অপরাধ করলে তার শাস্তি হয় এটা স্বাভাবিক। কিন্তু কোনো অপরাধ না করে শাস্তি পাওয়া মোটেও স্বাভাবিক কাজ না। নামগঞ্জের আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, আমিনুল হক, আমিরুল হক ও আব্দাল হোসেনও কোনো অপরাধ না করে আদালত পাড়ায় দৌড়াচ্ছেন প্রায় প্রতিদিন। তারা নিজেরাও জানেন না তারা কি অপরাধ করেছিলেন।

বৃহস্পতিবার(২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শহরের শহীদ জগৎ জ্যোতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্যই জানান ভুক্তভোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, আমি একজন কয়লা আমদানিকারক। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় আমি কয়লার ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু গেলো কয়েকদিন আগে রাতে আমার বাসায় পুলিশ আসে এবং আমাকে বলে আমার নামে নাকি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডসহ। আমি পুলিশের সাথে থানায় গেলে জানতে পারি মাদারীপুরের থানার একটি মাদক মামলায় আমাকে গ্রেপ্তার ও সাজা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু আমি কোনদিন মাদারিপুরে যাইনি। তাহলে মাদক মামলায় কিভাবে জড়াবো। পরবর্তীতে আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি মাদারিপুর এলাকার বাবুল সরদার নামে এক ব্যক্তির মামলা সেটি আমার নামে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন কয়দিন পর পর এই মিথ্যা মামলার জন্য আমাকে আদালত পাড়ায় দৌড়াতে হয়।

অন্যদিকে সিআর-২০১২/১৯ (ঢাকা) ভুয়া একটি মামলায় ছাতক উপজেলার আব্দাল হোসেন ২৭দিনের জেল খেটেছেন এবং তার ছোট ভাই কামরান হোসেন ১ দিন জেল খেটেছেন এবং তাদের প্রতিবেশী আমিনুল হককেও একই ভুয়া মামলায় আসামি ও গ্রেপ্তার করা হয়। বড় ভাই আব্দাল হোসেন ২৭ দিন জেল খাটলেও কামরান হোসেনের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা থাকায় আদালত তাকে জামিন দেন এবং পরবর্তীতে আদালত সবাইকে জামিন দেন।

ভুক্তভোগীরা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরাও কোন সময় ঢাকায় যাই নাই। তবুও ঢাকার একটি মামলায় আমাদের আসামি করা হয়েছে এবং জেল খাটতে হয়েছে। তারা দাবি করেন কোন একটি খারাপ মহল তাদের হয়রানী করার জন্য এসকল ভুয়া মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করাচ্ছে। এসময় তারা সত্য মিথ্যা যাচাই বাছাইয়ের জন্য সঠিক তদন্তের জন্য আহবান জানান।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আইনজীবী আবুল বাশার, আবু হানিফ নোমান, আকিক আহমেদ প্রমুখ।

পরে ভুক্তভোগীদের পক্ষে আইনজীবী আবুল বাশার বলেন, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। আমরা আদালতকে অনুরোধ করেছি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার জন্য। পরবর্তীতে আদালত বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন সিআর-২০১২/১৯ (ঢাকা) নংয়ে কোন মামলার অস্তিত্ব নেই। ফলে আদালত তাদের মুক্তি প্রদান পূর্বক মামলার দায় হতে অব্যাহতি প্রদান করে।

তিনি আরও বলেন, কয়লা আমদানিকারক আব্দুল্লাহ আল মাসুদকেও যে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার ও সাজা প্রদান করা হয়েছিলো সেটিরও মাদারীপুরে ওসি, কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক জিআর এর সাথে যোগাযোগ করা হলে উল্লেখিত মামলায় আব্দুল্লাহ আল মাসুদ নামে কোন আসামি অভিযুক্ত নেই বলে জানা যায়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত