সিলেটটুডে ডেস্ক

২৮ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ০১:৪৯

‘সমাজকে ভালো কিছু দিতে হলে ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে’

রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন বেলুড়, ভারতের সিনিয়র ট্রাস্টী ও অছি পরিষদ সদস্য শ্রীমৎ স্বামী দিব্যানন্দজী মহারাজ বলেছেন, ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে ঔপনিবেশিক ভারতবর্ষে যে কয়েকজন মহান ব্যক্তির আবির্ভাব হয়েছে স্বামীজী তাঁদের অন্যতম। পরাধীন ভারতবাসীকে জ্ঞান-বিজ্ঞান-শিক্ষা-সামাজিক সংস্কার-ধর্মবোধ বা আধ্যাত্মিকতার দীপ্তিময় গৌরবোজ্জ্বল জীবনের পথ প্রদর্শনে যে কয়জন মনীষী আজও ভারতবর্ষে চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন- তাঁদের মধ্যে স্বামীজীর অবদান এক বাক্যে স্বীকার্য। তিনি সংসারত্যাগী সন্ন্যাসী হলেও সংসারকে মায়া বা অলীক বলে অবহেলা করেননি বরং তার মলিনতা, কলুষ দূর করা ছিল স্বামীজীর কর্মবহুল স্বল্পস্থায়ী জীবনের প্রধান অভীপ্সা। তাই তো স্বামীজী অধ্যাত্ম শিক্ষাকে হাতিয়ার করে বাংলা তথা ভারতবর্ষের শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে আমূল পরিবর্তন সাধনের মূলমন্ত্র শুনিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, সমাজ সুন্দর করতে হলে নিজেকে সুন্দর হতে হবে। নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে হিংসায় বশিভূত হয়ে তারা সমাজকে কিছু দিতে পারে না। মনে রাখতে হবে যে অন্যকে কাঁদায় সে একদিন কাঁদে। মানুষকে যেন আমরা ঘৃনা না করি। সমাজকে ভালো কিছু দিতে হলে ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে।

শ্রীমৎ স্বামী দিব্যানন্দজী মহারাজ ২৭ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ১৮৫তম আবির্ভাব তিথি ও বার্ষিক উৎসব উপলক্ষে সিলেট রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে ৪ দিনব্যাপী ব্যাপক অনুষ্ঠানমালার ৩য় দিনে সন্ধ্যা ৬টায় ‘স্বামীজীর সমাজ ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

সিলেট রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের সম্পাদক স্বামী চন্দ্রনাথানন্দজী মহারাজ স্বাগত বক্তব্যের মধ্যে সূচিত অনুষ্ঠানে অধ্যাপক বিজিত কুমার দে’র সভাপতিত্বে ও মিশনের প্রাক্তন ছাত্র অধ্যাপক কানন কান্তি দাসের উপস্থাপনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন বেলুড়, ভারতের সিনিয়র ট্রাস্টী ও অছি পরিষদ সদস্য শ্রীমৎ স্বামী জ্ঞানলোকানন্দজী মহারাজ। আলোচনায় অংশ গ্রহণ করবেন এডভোকেট বেদানন্দ ভট্টাচার্য্য, এডভোকেট বিজয়কৃষ্ণ বিশ্বাস, স্বামী বিষ্ণুকৃপানন্দ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সিলেট রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালনা কমিটির সদস্য বীরেন্দ্র সূত্রধর।

পরে রাত ৮টায় বিশেষ সঙ্গীতানুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করবেন হিমাংশু বিশ্বাস, রানা কুমার সিনহা, বিজন রায়, প্রতীক এন্দ, অনুরাগ দাস, অশোক আচার্য্য ও অর্ণব কান্তি সিংহ প্রমুখ।

এর আগে উৎসবের তৃতীয় দিন সকাল সাড়ে ১০টায় ডাঃ দীপিকা চক্রবর্ত্তী ও মৌসুমী পুরকায়স্থ এর যৌথ পরিচালনায় গীতি আলেখ্য। বেলা সাড়ে ১১টায় প্রদীপ দে বটেশ^র সিলেটের পরিচালনায় কালী কীর্ত্তন, দুপুর ১টায় কবিরতœ মণিনাথ কৃষ্ণাল বাহুবল হবিগঞ্জের পরিবেশনায় পদাবলী কীর্তন। বিকাল ৪টায় শ্রীমা সারদা সংঘ সিলেটের পরিবেশনায় গীতি আলেখ্য। বিকার ৫টায় পূর্ণিমা দত্ত রায় সিলেটের পরিবেশনায় ভজন সঙ্গীত।

উৎসবের ৪র্থ দিন অর্থ শেষ দিন আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় পদ্মিনী রায় ইমন সিলেটের পরিবেশনায় গীতি আলেখ্য। বেলা সাড়ে ১১টায় নাট্যম সঙ্গীত বিদ্যালয় কাজলশাহ, সিলেটের পরিবেশনায় সঙ্গীতানুষ্ঠান। দুপুর সাড়ে ১২টায় কবিরত্ন মণিনাথ কৃষ্ণাল বাহুবল হিবগঞ্জের পরিবেশনায় রামায়ণ গান। বিকেল ৪টায় নীলেন্দু ভট্টাচার্য্যরে পরিবেশনায় সঙ্গীতাঞ্জলি। বিকাল ৫টায় প্রণতি ভট্টাচার্য্য সিলেটের পরিচালনায় গীতি আলেখ্য।

বিরাজ মাধব চক্রবর্ত্তী মানসের সভাপতিত্বে সন্ধ্যা ৬টায় ‘ধর্ম সমন্বয়ে শ্রীরামকৃষ্ণ’ শীর্ষক আলোচনা সভা। সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন বেলুড়, ভারতের সিনিয়র ট্রাস্টী ও অছি পরিষদ সদস্য শ্রীমৎ স্বামী দিব্যানন্দজী মহারাজ। আলোচনায় অংশ গ্রহণ করবেন রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন বেলুড়, ভারতের সিনিয়র ট্রাস্টী ও অছি পরিষদ সদস্য শ্রীমৎ স্বামী জ্ঞানলোকানন্দজী মহারাজ, মহানাম সম্প্রদায় বাংলাদেশের সভাপতি শ্রীমৎ কান্তিবন্ধু ব্রহ্মচারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন সিলেটের পরিচালক ফরিদ উদ্দিন আহমদ, ক্যাথলিক ধর্ম প্রদেশ সিলেটের বিশপ বিজয় এনডি ক্রুজ, বৌদ্ধ বিহার সিলেটের অধ্যক্ষ সংঘানন্দ থেরো, স্বামী নামামৃতানন্দ।

রাত ৮টায় নীলাঞ্জন দাস টুকুর নির্দেশনায় ও বিবেকানন্দ বিদ্যার্থী ভবনের ছাত্রবৃন্দের পরিবেশনায় নাটক অনুষ্ঠিত হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত