কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

২৬ এপ্রিল, ২০২০ ১৯:৪৮

কমলগঞ্জে করোনা আতঙ্ক, ঢাকা ফেরত পুলিশ সদস্যের বাড়ির ফটকে গ্রামবাসীর তালা!

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুপাটিলায় নারায়ণগঞ্জ থেকে ফেরা দুই নারী ও তাদের পিতার অবাধে চলাফেরায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। অপরদিকে ঢাকা ফেরত এক পুলিশ সদস্যের পরিবার সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বাড়ির ফটকে তালা লাগিয়েছে গ্রামবাসী। হবিগঞ্জ থেকে কমলগঞ্জের নিজ বাড়ি ফেরা আরও এক এনজিও কর্মীর নমুনা সংগ্রহ করে তাকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

জানা যায়, উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুপাটিলা গ্রামে আব্বাস আলীর দুই কন্যা নারায়ণগঞ্জ থেকে গত বৃহস্পতিবার ভোরে গোপনে বাড়ি ফেরে। এরপর দুই নারী ও তাদের পিতা বাড়িতে ও গ্রামে অবাধে চলাফেরা নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিলেও তারা মানছেন না। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।

বিজ্ঞাপন

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পতনঊষার ইউপি সদস্য আশিক মিয়া বলেন, তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেয়া হলেও ঘরে একত্রে থাকার পর তাদের বাবা ও ফুফু বাইরে ঘোরাফেরা করছেন। ফলে স্থানীয়ভাবে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

অপরদিকে কমলগঞ্জ পৌরসভার শ্রীনাথপুর এলাকার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ উপ-পরিদর্শকের ছেলে গোয়েন্দা পুলিশ সদস্য ও তার স্ত্রী সন্তান মা গত ২৪ এপ্রিল ভোরে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরেন। তারা বাড়ি ফেরার পর জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। পরে তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখার জন্য পৌর মেয়র ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে গ্রামবাসীরা দাবি জানান। পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা গ্রহণে বিলম্ব হওয়ায় গ্রামবাসীরা শনিবার (২৫ এপ্রিল) বিকালে তার বাড়ির ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়।

কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. জুয়েল আহমদ জানান, পুলিশ সদস্য সপরিবারে বাড়ি ফিরেছেন শুনে তিনি ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে পাঠিয়ে এ পরিবারের সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন।

পৌরসভার গোপালনগর গ্রামে হবিগঞ্জ থেকে ফেরত এক এনজিও কর্মীর বাড়িতে রোববার সকালে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সাথে সাথে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়। বাপন দেব এনজিও সংস্থা হিড বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটে কর্মরত ছিলেন।

শমশেরনগর ইউনিয়নের বাদে সোনাপুর গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, গত ২/৩ দিন পূর্বে এক ব্যক্তি ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি ফিরে। গ্রামবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা বললে সে মাঝে মাঝে বাড়ির বাইরে এমনকি বাজারে গিয়েও ঘোরাফেরা করে। এতে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। এদিকে মুন্সীবাজার ইউনিয়নের হরিশ্মরণ গ্রামের এক ব্যক্তির জ¦র, সর্দি ও শ্বাসকষ্ট থাকায় রোববার বিকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকগণ তার বাড়িতে এসে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যান এবং তাকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম, মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া বলেন, এনজিও কর্মী করোনা আক্রান্ত এলাকা থেকে এসেছেন, সেজন্য তাকে আজ থেকে ১৪ দিনের জন্য হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে। অন্যদিকে পৌরসভার শ্রীনাথপুর এলাকার ঢাকা ফেরত পুলিশ সদস্যের পরিবারকে ১৪ দিনে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত