সিলেটটুডে ডেস্ক

২৬ আগস্ট, ২০২৩ ১১:৪৫

ভাষাসৈনিক কয়েস উদ্দিনের মৃত্যু, মরদেহ দান করা হবে গবেষণার কাজে

ভাষাসৈনিক কয়েস উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

ভাষাসৈনিক কয়েস উদ্দিন সরকার আর নেই। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে জামালপুর শহরের গেইটপাড় এলাকায় নিজ বাড়িতে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় মারা যান প্রবীণ এই ভাষাসৈনিক। তার বয়স পৌঁছেছিল শতবর্ষের কাছাকাছি।

মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অকুতোভয় এই বীরের অন্তিম ইচ্ছা অনুযায়ী, মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য তার মরদেহ দান করা হবে।

ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত কয়েস উদ্দিন সরকার শোষণ-বঞ্চনা, অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে বহু গান রচনা করে গেছেন। নিজেই তাতে সুরারোপ করে গেয়ে বেড়াতেন। শহরের যেখানেই প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের সভা চলুক না কেন, তিনি থাকতেন প্রথম কাতারে।

কয়েস উদ্দিন ছিলেন ব্রিটিশবিরোধী চেতনায় বিশ্বাসী। তিনি ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলন করেছেন। শৈশবেই বাবাকে হারান, তাই খুব বেশি লেখাপড়া করতে পারেননি সাংসারিক অভাব-অনটনের কারণে। ১৯৫২ সালে জিন্নাহ যখন ঢাকার কার্জন হলে রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার ঘোষণা দেন, তখনই শুরু হয় ভাষা আন্দোলন। কয়েস উদ্দিন সরকার যোগ দেন ভাষা আন্দোলনে। তিনি যাদের নেতৃত্বে জামালপুরে ভাষা আন্দোলন করেছিলেন তারা হলেন তৈয়ব আলী, তাছির মোক্তার, মোয়াজ্জেম উকিল, হায়দর আলী মল্লিক, নাসির সরকার প্রমুখ।

ভাষা আন্দোলন পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতাসংগ্রামী হিসেবে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন তিনি। আইয়ুববিরোধী গান রচনা করার জন্য আইয়ুব খানের মার্শাল লয়ের সময় এক বছর জেল খাটেন কয়েস উদ্দিন।

অভাব-অনটনে জীবনযাপন করলেও নিজের নীতি-আদর্শ থেকে কখনও সরে আসেননি। দীর্ঘদিন অসুস্থ অবস্থায় থাকলেও গ্রহণ করেননি কোনো সরকারি সুযোগসুবিধা। বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ব্যক্তি, বিত্তবান বা প্রতিষ্ঠান তার সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে চাইলেও ফিরিয়ে দিয়েছেন বিনয়ের সঙ্গে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত