সিলেটটুডে ডেস্ক

০৪ অক্টোবর, ২০২৩ ১২:৪২

পুলিশ হেফাজতে দুদকের সাবেক উপপরিচালকের মৃত্যু

দুদকের সাবেক উপপরিচালক ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লা। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানা পুলিশের হেফাজতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপপরিচালক ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লার মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, ‘দুদকের সাবেক ওই কর্মকর্তা হার্টের রোগী ছিলেন। থানায় নিয়ে আসার পর উনি অসুস্থ অনুভব করলে ওনাকে ওষুধ নিতে দেয়নি পুলিশ।’

নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল পার্ক ভিউতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লা নগরীর চান্দগাঁও থানার ১ কিলোমিটার এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। তিনি সর্বশেষ চট্টগ্রামে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২-এ উপপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেখান থেকে ২০০৭ সালের ১২ জুলাই অবসর গ্রহণ করেন।

দুদকের সাবেক কর্মকর্তার মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি-উত্তর) পংকজ দত্ত।

শহীদুল্লার ছেলে ক্যাপ্টেন নাফিস শহিদ বলেন, ‘রাত ১১টার দিকে চান্দগাঁও থানার দুজন এএসআই গিয়ে আমার বাবাকে থানায় নিয়ে আসেন। সঙ্গে সঙ্গে আমার চাচারা থানায় যান। উনি হার্টের পেশেন্ট; উনার ইনহেলার আর মেডিসিন লাগে সবসময়। বাবাকে থানায় নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফটক বন্ধ করে দেন। ইনহেলার ও মেডিসিনও বাবার কাছে পৌঁছাতে দেয়নি। পরে ১২টার দিকে বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি ঢাকায় ছিলাম। আমাদের জমি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে বিরোধ ছিল, তবে সাম্প্রতিক কোনো মামলার বিষয়ে আমরা শুনিনি। এমনকি আমার বাবা আদালত থেকে কোনো নোটিশও পাননি।’

দুদক কর্মকর্তা শহীদুল্লাকে পরিকল্পিতভাবে পুলিশ হত্যা করেছে অভিযোগ করে তার আরেক ছেলে আসিফ শহিদ বলেন, ‘কোনো ওয়ারেন্ট না দেখিয়েই ধস্তাধস্তি করে বাবাকে নিয়ে গেছে তারা (পুলিশ)। বাবা দুদকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ছিলেন। ন্যূনতম সম্মানটা উনাকে দেয়নি তারা। মার্ডার করেছে তারা, স্প্রেটা পর্যন্ত দিতে দেয়নি। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাবাকে দুই দিক থেকে দুজন ও একজন পেছনে শার্টের কলার ধরে ছিলেন, তবে সিসিটিভি ক্যামেরা যেখানে যেখানে আছে, সেটা পয়েন্ট আউট করে সেখান দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে গেছে।’

পুলিশের এডিসি পংকজ দত্ত বলেন, ‘একটি সিআর মামলায় রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারের ১৫ মিনিট পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত পার্ক ভিউ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

প্রাণ হারানো ব্যক্তির সঙ্গে কোনো ধরণের অসদাচরণ করা হয়নি দাবি করে চান্দগাঁও থানার ওসি খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘উনাকে গ্রেপ্তারের পর খারাপ লাগছে বলে জানান। তখন আমার কক্ষে এনে বসিয়েছি। পরে তার ভাইদের জানিয়ে তারাসহ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছেন।’

এই ঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত