সিলেটটুডে ডেস্ক

১৬ অক্টোবর, ২০২৩ ০৮:৩৮

ইমামকে ইউএনওর ‘স্যরি’, চাকরি ফিরিয়ে দিলেন ডিসি

ছবি : সংগৃহীত

মসজিদের সামনের সারিতে বসা এবং ইউএনও-কে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চাকরি হারানো সেই ইমাম ফিরেছেন কর্মস্থলে। জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে চাকরি ফিরে পেয়েছেন তিনি এবং ইমামের সঙ্গে সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে ইউএনওর ‘স্যরি’ বলার মাধ্যমে।

গত শুক্রবার খুতবা শেষে জুমার নামাজ শুরুর আগে লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফোরকান এলাহি অনুপমকে একটু সরে দাঁড়াতে বলাকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার ভাটরা কাছারী কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা আবুল বাশারকে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ ওঠে।

এ ছাড়া এ ঘটনায় ওই ইউএনও ক্ষুব্ধ হয়ে একাধিকবার সেই ইমামকে মসজিদের পুকুরের পানিতে চুবানোর হুমকি দেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘নামাজের সময় ইউএনওকে সরে দাঁড়াতে বলায় চাকরি হারালেন ইমাম’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে খবরটি দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

জানা গেছে, সর্বশেষ রোববার বেলা সাড়ে ৩টায় কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তার কার্যালয়ে যান ইউএনওর তোপের মুখে পড়া সেই ইমাম। এ সময় সেখানে উপস্থিত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বডুয়া, লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফোরকান এলাহি অনুপম, জেলা ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্থানীয় পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল্লাহ, স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার গোলাপ হোসেন, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ক্বারি আবদুর রশিদ, সেক্রেটারি জহিরুল ইসলামসহ, কেন্দ্রীয় ও জেলার আলেমগণ।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ইমাম ও মুয়াজ্জিন ঘটনার পুরো বিবরণ দেন। ইমাম-মুয়াজ্জিনসহ সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য শুনে জেলা প্রশাসক ইউএনওকে ইমামের কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে বলেন। এ সময় ইউএনও স্যরি বলে ওই ইমামের সঙ্গে কোলাকুলি করেন। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইমামকে নিজের মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর ঘটবে না বলে আশ্বস্ত করেন।

কুমিল্লা জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি হাফেজ মিজানুর রহমান বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ইমামের ঘটনাটি সমাধান হয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয় ইমামকে নামাজ পড়াতে বলেছেন এবং কেউ হুমকি-ধমকি দিলে জেলা প্রশাসককে অবহিত করতে বলেছেন। সমাধানের পর ইউএনও নিজের গাড়িতে করে ইমামকে নিয়ে ওই মসজিদে গেছেন।

মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুল বাশার বলেন, নামাজ শুরুর আগে ইমামের পেছনে মুয়াজ্জিন থাকে। তখন পেছনে অন্য একজনকে দেখে একটু সরতে বলি। পরে জানতে পারলাম উনি ইউএনও। তখন আমি ওনার কাছে স্যরি বলি। পরে উনি আমাকে পুকুরে চোবাবেন বলছেন। এরপর স্থানীয় একজন চেয়ারম্যান ও ইউএনও স্যার তার পাঠানো লোকের বরাত দিয়ে আমাকে চাকরিচ্যুত করার বিষয়টি জানান।

রোববার (১৫ অক্টোবর) মাগরিবের নামাজ থেকে তিনি মসজিদে ইমামতি শুরু করেছেন। চাকরি ফিরে পাওয়ার পর প্রথম ওয়াক্তে (মাগরিব) তার পেছনে নামাজ আদায় করেছেন লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফোরকান এলাহি অনুপম।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত