অনলাইন ডেস্ক

০৮ মে, ২০১৬ ০০:৫০

চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে নিহত ৬

চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে ৬জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। রাজশাহীর বাগমারা, নরসিংদীর রায়পুরা, ঠাকুরগাঁও ও কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

রাজশাহী
বাগমারায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- উপজেলার সরঞ্জি ভাসুপাড়া গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে সিদ্দিকুর রহমান (২৮), ছহির উদ্দিনের ছেলে বুলু (৩৮) এবং মনতাজ আলী (৩৫)।

সংঘর্ষে বাগমারা থানার ওসি মতিয়ার রহমান ও এএসআই আমিনুল ইসলামসহ কমপক্ষে ছয় পুলিশ আহত হয়েছেন। শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় বাগমারা উপজেলার হাটগাঙ্গোপাড়ায় সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে সংঘর্ষ।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আউচপাড়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন থানা আওয়ামী লীগের সদস্য সরদার জান মোহাম্মদ। এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন আউচপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুজ্জামান শহীদ।

নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন বাগমারা আসনের সাংসদ এনামুল হককে শোকজ করে উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত করে দেয়। এরপর থেকে উপজেলার দলীয় প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের তুমুল বিরোধের সৃষ্টি হয়। প্রায় প্রতিদিনই ছোট খাট সংঘর্ষ চলতে থাকে।

প্রত্যক্ষর্দীরা জানান, শনিবার বিকেলে হাটগাঙ্গোপাড়া বাজারে বিদ্রোহী প্রার্থী শহিদুজ্জামানের সমর্থকরা নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় আনন্দ করতে থাকে। ওই সময় তাতে হামলা করে দলীয় প্রার্থী জান মোহাম্মদের সমর্থকরা। এতে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। লাঠি-সোটা, হাসুয়া, রামদা নিয়ে তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় দুপক্ষের মাঝে গুলি বিনিময় ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে জান মোহাম্মদের সমর্থকরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তারা বাগমারা থানার ওসি মতিয়ার রহমান ও এএসআই আমিনুল ইসলামকে ধারালো হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। এতে ওসি মতিয়ার রহমান গুরুতর জখম হন। এএসআই আমিনুলের একটি আঙ্গুল কেটে মাটিতে পড়ে যায়। হামলায় আরও চার পুলিশ আহত হন। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালালে গুলিতে নিহত হন তিনজন। গুরুতর আহত আরো দুজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি খুরশিদ আলম জানান, আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ থামাতে গেলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এসময় পুলিশ গুলি করলে দুজন নিহত হন। অপর একজন সংঘর্ষে মারা গেছেন বলে তিনি জেনেছেন। পুলিশ লাশ উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

নরসিংদী
শনিবার দুপুরে রায়পুর উপজেলার বাড়াতলি ইউনিয়নের মধ্যনগর কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাসুদুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। এতে আলী হোসেন (৫৫) নামে একজন নিহত হন। আহত হন অন্তত ৭ জন।

রায়পুর থানার ওসি আজহারুল ইসলাম একজন নিহত হওয়ার ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।

ঠাকুরগাঁও
জেলার বালিয়াডাঙ্গা উপজেলার পারিয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের কাওখালী দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে সদস্যপ্রার্থী মো. আলম ও রিয়াজ উদ্দিনের সমর্থকদের মধ্যে দুপুরে সংঘর্ষ ঘটে। এতে মাহবুব আলম (২৫) নামে একজন নিহত হন। আহত হন কমপক্ষে ১৩ জন। বালিয়াডাঙ্গা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কুমিল্লা
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় নির্বাচনী সহিসংতায় একজন নিহত হয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে ভোট চলাকালীন শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার  মাধবপুর ইউনিয়নের উত্তর চান্দলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

দুই সদস্য প্রার্থী সুলতান ও রেজাউলের সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষে নিহত নিহত তাপসচন্দ্র দাস (৩৬) উত্তর চান্দলা গ্রামের কানু চন্দ্র দাসের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণপাড়া থানার ওসি বদিউজ্জামান বলেন, দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত ও অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন।

পুলিশ জানায়, সকালে ভোট কেন্দ্রে আসার পথে ওই যুবকের ওপর হামলা হলে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। ওই ঘটনার পর চান্দলা প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রটির ভোট গ্রহণ স্থগিত করে ৭ জনকে আটক করা হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত