এম এইচ মকিম, পাবনা

২১ জুলাই, ২০১৬ ১২:২৫

কলেজ জাতীয়করণের জন্য এমপির ভুয়া ডিওলেটার!

পাবনার সুজানগরের দুলাইতে অবস্থিত ডা. জহুরুল কামাল ডিগ্রি কলেজ জাতীয়করণ করতে স্থানীয় এমপির ভুয়া ডিও লেটার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অধ্যক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

দুলাই এলাকার লোকজন, কলেজের একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ডা. জহুরুল কামাল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল লতিফ তাদের কলেজ জাতীয়করণ করার নাম করে শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা সংগ্রহ করেন। কিন্তু জাতীয়করণের তালিকায় কলেজের নাম আসেনি। এই অবস্থায় কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসী ওই কলেজ জাতীয়করণের তালিকা থেকে বাদ পড়ার জন্য অধ্যক্ষকে দায়ী করে তাঁর অপসারণ তথা কলেজটিকে জাতীয়করণের দাবিতে গত ১৬ জুলাই মানববন্ধন এবং পাবনা-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। এই অবস্থায় অধ্যক্ষ আবদুল লতিফ নিজের গাঁ বাঁচাতে এমপির স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া ডিওলেটার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।  ভুয়া ডিও লেটার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ (অতিরিক্ত সচিব) সাজ্জাদুল হাসান গতকাল বুধবার দুপুরে পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) খন্দকার আজিজুল হক আরজুকে ফোন দেন।

এ ব্যাপারে খন্দকার আজিজুল হক আরজুর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আমার স্বাক্ষর স্ক্যান করা ভুয়া ওই ডিও লেটার পৌঁছার পর প্রধানমন্ত্রীর পিএস সাজ্জাদুল হাসান আমার কাছে ফোন করে জানতে চেয়েছিলেন, আমি ডা. জহুরুল কামাল ডিগ্রি কলেজ জাতীয়করণের জন্য কোনো ডিও লেটার দিয়েছি কি না? আমি উত্তরে বলেছি, আমি ওই কলেজ জাতীয়করণের জন্য কোনো ডিও লেটার দেইনি। আমি ডিওলেটার দিয়েছি, সুজানগর নিজাম উদ্দিন আজগর আলী ডিগ্রি কলেজ জাতীয়করণের জন্য- যেটি ইতিমধ্যে জাতীয়করণের তালিকাভুক্ত হয়েছে। এ কথা শোনার পর পিএস বলেছেন, এটি তাহলে ভুয়া ডিওলেটার। আমি তখন বলেছি অবশ্যই ভুয়া। আপনি ভুয়া ডিওলেটার প্রদানকারীদের গ্রেপ্তারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।’

এমপি আরজু আরো বলেন, আমি বিষয়টি জানার পর অধ্যক্ষ আবদুল লতিফকে ফোন করে সতর্ক করেছি। ডিও লেটারটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কে পাঠিয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে এমপি আরজু বলেন, ‘ শুনেছি ডাকযোগে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর পিএস বলেন, আমি ওই ডিও লেটার পাওয়ার পর বিষয়টি এমপিকে অবহিত করেছি। তিনি যাচাই করে ব্যবস্থা নেবেন। যোগাযোগ করা হলে অধ্যক্ষ আবদুল লতিফ দাবি করেন, আমি এমপি মহোদয়ের স্বাক্ষর স্ক্যান করে ভুয়া কোনো ডিও লেটার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাইনি। কেউ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ওই ডিও লেটার পাঠাতে পারে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত