সিলেটটুডে ডেস্ক

২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ২১:৪৩

দাফনের সময় কেঁদে উঠলো নবজাতক

ফরিদপুরে ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের এক চিকিৎসক নবজাতককে মৃত ঘোষণার ছয় ঘণ্টা পর দাফন করার সময় কান্না ও নড়াচড়া করে ওঠলো।

নবজাতকটি শহরের কমলাপুর এলাকার বাসিন্দা ক্রিকেটার নাজমুল হুদা মিঠু ও আইনজীবী নাজনিন আক্তার দম্পতির প্রথম মেয়ে শিশু। নবজাতক বর্তমানে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছে।
 
জানা যায়, বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের কমলাপুর এলাকা থেকে প্রসূতি অ্যাডভোকেট নাজনিন আক্তার পপিকে অসুস্থাবস্থায় ওই হাসপাতালে নিয়ে আসেন শ্বশুর মো. আবুল কালাম মিয়া। এ সময় ওই হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে অন্য প্রসূতি রোগীর অপারেশন করছিলেন ডা. রিজিয়া আলম।
 
মো. আবুল কালাম মিয়া জানান, রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও হাসপাতালের চিকিৎসক অন্য কোথাও নিয়ে যেতে বলেন। পরে স্বাভাবিকভাবেই নাজনীন মেয়ে সন্তান প্রসব করে। এর দুই ঘণ্টা পর ডা. রিজিয়া আলম ওই নবজাতকে মৃত ঘোষণা করেন।
 
তিনি বলেন, ‘পরে বুধবার রাত তিনটার দিকে নবজাতককে শহরের অলীপুর কবরস্থানে দাফন করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে সকালে দাফন করা হবে বলে জানিয়ে দেন গোরস্থানের দায়িত্বে থাকা মাওলানা হাজি আব্দুর রব। পরে শিশুটিকে কাটুনে মোড়ানো অবস্থায় কবরস্থানের অন্য একটি বাধানো কবরের ভিতরে রেখে চলে আসি।’
 
মাওলানা হাজী আব্দুর রব জানান, বৃহস্পতিবার সকালে কবর দিতে গেলে শিশুটির মাথা কোনো দিকে তা নিশ্চিত করতে কাটুন খুললে শিশুটি কান্না করে নড়েচড়ে ওঠে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে পরিবারের সদস্যরাসহ পুনরায় ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি চিকিৎসকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘সেবা নামে এ কেমন আচরণ, একটি জীবিত শিশুকে মৃত বলে কবরে পাঠিয়ে সারারাত ফেলে রাখা হলো। এর বিচার হওয়া উচিত।’

নবজাতকের বাবা ফরিদপুর জেলা ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় নাজমুল হুদা মিঠু বলেন, ‘এই হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক ও তাদের সহযোগীরা নিশ্চিতভাবে দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। আমার মতো আর কোনো বাবার ভাগ্যে যেনো এমন দুর্ভোগ না ঘটে।’
 
এ প্রসঙ্গে ডা. রিজিয়া আলমের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন।
 
তবে ওই হাসপাতালের পরিচালনা কমিটির সদস্য শওকত আলী জাহিদ বলেন, ‘এই ঘটনায় হাসপাতালের কারো কোনো গাফলতি থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ফরিদপুর সিভিল সার্জন ডা. অরুণ কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। কোনো রোগী নিয়মিত হউক বা না হউক, রোগী চিকিৎসকের কাছে এলে তাকে সেবা দিতে হবে। এটাই সত্য। কেনো এমন হলো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত